নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে রবিউল (২১) নামে এক পরকীয়া প্রেমিককে বাড়ীতে ডেকে নিয়ে পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রেমিকা জাকিয়া আক্তার মীম (১৮) এর পিতা জাহিদ হাসান জাকির ও স্বামী শফিকের বিরুদ্ধে। প্রেমিক উপজেলার চন্দনধূলর গ্রামের মোঃ হোসেন শেখের ছেলে এবং প্রেমিকা উত্তর কুসুমপুর (শেখবাড়ী) গ্রামের দলিল লেখক জাহিদ হাসান জাকিরের মেয়ে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উত্তর কুসুমপুর গ্রামের শেখবাড়ীর সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে ভুক্তভোগীর পিতা মোঃ হোসেন শেখ বাদী হয়ে সিরাজদিখান থানায় জাহিদ হাসান জাকিরকে ১নং বিবাদীসহ আরো তিনজনকে বিবাদী করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী বলেন, ২০১৬ সালে রবিউল ও জাকিয়া কুসুমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো। সেসময় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একইবছর জাকিয়ার বাবা তাকে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেয়। বিয়ের পর জাকিয়ার স্বামী শফিক (৩০) প্রবাসে চলে গেলে জাকিয়া রবিউলের সাথে প্রায় সময় মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতো। সেই সুবাদে তাদের মধ্যে পুনরায় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। কিছুদিন আগে জাকিয়ার স্বামী প্রবাস থেকে ফিরে জাকিয়া এবং রবিউলের কথোপকথনের রেকর্ড জাকিয়ার মোবাইল ফোনে দেখতে পায়। ঘটনার দিন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রবিউলের মোবাইল ফোনে ফোন করে ইছাপুরা চৌরাস্তায় দেখা করার জন্য বলে জাকিয়া। রবিউল দেখা করতে গিয়ে জাকিয়ার সাথে তার দাদীকে দেখতে পেয়ে দেখা না করে চলে আসে। ওইদিন সন্ধ্যায় জাকিয়া রবিউলকে ফোনে জানায় তার সাথে দেখা না করলে সে মরে যাবে। প্রেমিকার মন রক্ষার্থে জাকিয়ার সাথে দেখা করতে তার বাবার বাড়ীর সামনে গেলে জাকিয়ার বাবা জাহিদ হাসান জাকির ও স্বামী শফিক বাঁশ ও কাঠের লাঠি দিয়ে তাকে মারধর করে। এতে রবিউলের বাম পায়ের হাড় ভেঙে যায় এবং মাথা ফেটে যায়। তাদের আঘাতে রবিউল মাটিতে পড়ে গেলে জাকিয়ার বাবা ও স্বামী কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে রবিউলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে। পরে জাকিয়ার এক চাচাসহ স্থানীয় লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় রবিউলকে উদ্ধার করে উপজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে।
ভুক্তভোগীর বাবা মোঃ হোসেন শেখ বলেন, আমার ছেলে না হয় তার মেয়ের সাথে কথা বলে অন্যায় করতে পারে। তারা আমার ছেলের বিচার করতে পারতো। না হয় আমাকে জানাতে পারতো।
তারা আমার ছেলেকে মারধর করে অন্যায় করেছে। আমি তাদের সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ ব্যাপারে ইছাপুরা ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ স্বপন বলেন, গতকাল রাতে আমাকে একজন ফোনে বিষয়টি জানায়। পরে আমি গিয়ে সেখানে রবিউলকে না পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখি তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমি ও রবিউলের বাবা চেয়ারম্যানকে ঘটনাটি জানাই। পরে চেয়ারম্যানের পরামর্শে ছেলের বাবাকে থানায় নিয়ে যাই। এর বেশী আমি আর বলতে পারবো না।
এ ব্যাপারে জাকিয়ার বাবা জাহিদ হাসান জাকিরের মুঠোফোনে বারংবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ফরিদ উদ্দিন রবিউলকে মারধরের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার পর ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।