নিজস্ব প্রতিনিধি
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ কতটা প্রস্তুত সেটা জানতে রবিবার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসছে ইউরোপীয় কূটনীতিক এবং জাপানের ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো। এছাড়া ইউরোপীয় কূটনীতিক, তাদের পরিবার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭ দেশের নাগরিকরা নিজ নিজ দেশে ফেরার উপায় নিয়েও আলোচনা হবে বৈঠকে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা সেলের প্রধান অতিরিক্ত সচিব ডা. খলিলুর রহমানের সঙ্গে বৈঠকটি হতে যাচ্ছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে যুক্তরাজ্য ছাড়া ইউরোপের অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশে যাত্রী প্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা। এমন সিদ্ধান্তে ইউরোপীয় কূটনীতিক, তাদের পরিবার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭ দেশের নাগরিকদের নিজ নিজ দেশে ফেরার বিষয়ে সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকাস্থ বিদেশি কূটনীতিকদের বিকল্প উপায়ে দেশে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করা হলেও উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্য ছাড়া ইউরোপের দেশগুলো।
ঢাকাস্থ ইউরোপীয় কূটনীতিকরা চাইলেই দেশে ফিরতে পারবেন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘যুক্তরাজ্য, চীন, থাইল্যান্ড ও হংকংয়ে চার রুট চালু রাখা হয়েছে। বিশেষ প্রয়োজন হলে ওই রুটগুলো ব্যবহার করা যাবে। তারা যেতে চাইলে এই পদ্ধতিতে দেশে ফিরতে পারেন।’
বেশি প্রয়োজন হলে ইউরোপীয় কূটনীতিকরা চার্টার্ড ফ্লাইটে দেশে ফিরতে পারবেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম তিনজনের করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংবাদ আসে। গতকাল শনিবার পর্যন্ত দেশে মোট ২৪ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর)। আর মারা গেছেন দুজন।
করোনায় ঢাকার এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় কূটনীতিকরা চিঠিতে বাংলাদেশে কোনো কূটনীতিক করোনা আক্রান্ত হলে তাদের চিকিৎসায় বিশেষ কোনো ব্যবস্থা আছে কি না সে বিষয়েও জানতে চেয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে।
এই প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, ‘আমাদের তাদের চিঠি পাবার পর দেশে ফেরার বিষয়ে আশস্ত করেছি। তাদের চিকিৎসার বিষয়ে বলেছি, তাদের লোকজন যে পরিমাণ চিকিৎসা পাবে তারাও সেরকমটা পাবে। আমরা এ বিষয়ে বৈষম্য করব না। তারপরও আমাদের সঙ্গে বৈঠক চেয়েছেন।’
ইউরোপীয় কূটনীতিকরা চিঠির জবাব দেওয়ার পরও তারা আশস্ত হতে পারছেন না। আর এ নিয়ে কূটনীতিকদের সমালোচনা করেন মোমেন। বলেন, ‘আপনারা আপনাদের দিক থেকে লক করেছেন। আমরাও আমাদের লোকদের সেফটি ও সিকিউরিটির জন্য খানিকটা লক করেছি। আমরাতো ওনাদের যাবার বিকল্প পথও রেখেছি। তারপরও আশস্ত কেন হতে পারছেন না তারাই ভালো বোঝেন।’
এদিকে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রয়োজন হলে বিমানবন্দর ‘শাটডাউন’ করা হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান।