আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জাতীয় পরিষদে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তার খারিজের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরামর্শে দেশটির আইনসভা ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এর আগে রবিবার দুপুরে পাকিস্তানের সংবিধানের পঞ্চম অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়া বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ হওয়ায় জাতিকে অভিনন্দন জানিয়ে ‘দেশে শাসন পরিবর্তনের বিদেশি প্রচেষ্টা ও ষড়যন্ত্র নাকচ হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। একইসঙ্গে তিনি প্রেসিডেন্টকে আইনসভা ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানান।
রবিবার অধিবেশন শুরু হওয়ার পরে তথ্যমন্ত্রী ফওয়াদ চৌধুরী বলেন, সংবিধানের ৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য থাকা প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক (বেসিক) দায়িত্ব। তিনি অভিযোগ করেন, সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিদেশি ষড়যন্ত্র কাজ করছে।
পাকিস্তানের পঞ্চম অনুচ্ছেদে বলা আছে- ১. প্রত্যেক নাগরিকের রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত থাকা মৌলিক দায়িত্ব; ২. সংবিধান ও আইনের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করা প্রত্যেক নাগরিকের জন্য অলংঘনীয় বাধ্যবাধকতা সে যেখানেই থাকুক না কেন এবং সেই সাথে অন্যান্য সকলের জন্যও প্রযোজ্য যারা আপাতত পাকিস্তানের অবস্থান করছে।
ফওয়াদ আরও বলেন, গত ৭ মার্চ একটি মিটিংয়ে যোগ দিতে আহ্বান জানায় বিদেশী দেশের প্রতিনিধিরা। তারা জানায়, ইমরান খানের বিরুদ্ধে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব তোলা হবে। তারপর দিন (৮ মার্চ) বিরোধীরা সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব তোলে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, মিটিংয়ে তাদের প্রতিনিধিদের বলা হয়েছিল যে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নির্ভর করছে। অনাস্থা প্রস্তাব পাস না হলে ভবিষ্যতে পাকিস্তানের পথ অনেক কঠিন হবে। তার মতে, এটি একটি অপারেশন। একটি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করতে চায় একটি বিদেশি দেশ। অবশ্য কোন দেশ ষড়যন্ত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে তা উল্লেখ করেননি তিনি।
অনাস্থা প্রস্তাব সম্পর্কে ডেপুটি স্পিকার বলেন, গত ৮ মার্চ পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব তোলা হয়। এটি অবশ্যই দেশের আইন ও সংবিধান অনুসারে হতে হবে। একটি নির্বাচিত সরকারকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সরানোর চেষ্টা সফল হতে দেওয়া যাবে না। এছাড়া, তিনি তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘যৌক্তিক’ হিসেবে উল্লেখ করেন। পরে দেশের আইন, সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিবেচনা করায় অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করেন তিনি। তারপর পার্লামেন্ট মুলতবি করেন। ডেপুটি স্পিকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তে হতবাক বিরোধী দলগুলো।
দেশটির প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলওয়াল-ভুট্টো জারদারি বলেছেন, অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি অনুষ্ঠানের সুযোগ না দিয়ে সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করেছে।
পাকিস্তানের আইনসভা ভেঙে দিলেন প্রেসিডেন্ট
আগের পোস্ট