নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সুন্দর-পরিচ্ছন্ন রাজনীতির পথে এগিয়ে যেতে হবে। আগামী প্রজন্মের জন্য একটি অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল উন্নত-সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে ত্রিশ লাখ শহীদের স্বপ্ন-সাধ বাস্তবায়ন করতে হবে।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভা ও খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ¦ মো. মোশাররফ মোল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম বেপারি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি শেখ মনিরুজ্জামান রিপন, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আসগর আলী, আব্দুর রব, লিটন মিয়া প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক। তিনি বাংলার মাটি ও মানুষের পরম আপনজন, শত বছরের জেঁকে বসা ঘোর নিশীথিনীর তিমির বিদারী অরুণ, ইতিহাসের বিস্ময়কর নেতৃত্বের কালজয়ী স্রষ্টা, ইতিহাসের মহানায়ক, বাঙালি জাতির বিমূর্ত ইতিহাস, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। বাঙালি জাতির পিতা। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। আমাদের অন্তহীন প্রেরণার উৎসÑ আধুনিক সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নসারথী।
তিনি বলেন, বাঙালি জাতির জন্য চরম দুর্ভাগ্য ও চির-পরিতাপের বিষয় কিছু কুলঙ্কার ষড়যন্ত্রকারীর হাতে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার হতে হয়েছে। এমনকি তার হত্যার বিচার পর্যন্ত চাওয়ার সুযোগ রাখেনি সেদিন খুনি-নরপিশাচরা।
তিনি আরও বলেন, ইতিহাসের ঘৃণিত কালো আইন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করে খুনি মোশতাক ও জিয়াউর রহমান চক্র। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের যাতে বিচারের সম্মুখীন হতে না হয় সেজন্য খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদ ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে অন্যতম জেনারেল জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে উক্ত অধ্যাদেশটি সংসদে অনুমোদনক্রমে আইনে পরিণত করা হয়। এমনকি খুনিদের বিভিন্ন বিদেশি দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়।
তিনি বলেন, আইন সবার জন্য সমান। তবে দেশে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে আইনের শাসনের ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছিল। ভাবতে পারেন যিনি একটি স্বাধীন দেশ- একটি সার্বভৌম ভূ-খন্ড, একটি মানচিত্র, একটি পতাকা উপহার দিলেন জাতির সেই মহান স্থপতির খুনির বিচার করা যাবে না ! নিষ্পাপ অবুঝ শিশু শেখ রাসেল, সুকান্ত বাবু এবং অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধু আরজু মনি, স্ত্রী বেগম মুজিবসহ ১৫ই আগস্টের খুনিদের বিচার করা যাবে না। এটা কোনো নরক রাজ্যের উপাখ্যান নয়। এটা এই বাংলাদেশে কিছু নরকের কীট, নরপশু বেইমান জাতিদ্রোহী কর্তৃক সংঘটিত ঘটনা। জাতি হিসেবে আমাদের ললাটে কলঙ্কের কালিমা এঁকে দিয়ে গেছে সেই ঘাতক নরপশুরা। আর যেন বাঙালি জাতিকে সেই কালো আইনের প্রবক্তা, বঙ্গবন্ধুর খুনি, জাতি-দ্রোহী, দেশদ্রোহী, মানবতা ও আইনের শত্রুদের কবলে পড়তে না হয়। তাদের লালনকারী বিএনপি-জামাত অশুভ শক্তি যেন আর রাজনীতিতে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে তা প্রত্যেকটি দেশপ্রেমিক নাগরিককে খেয়াল রাখতে হবে। এই অপশক্তির চূড়ান্ত পরাজয় নিশ্চিত করার পর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতির ধারা প্রবর্তনের পথে এগিয়ে নিতে হবে আগামী প্রজন্মকে।