নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘৃণ্য খুনি, ষড়যন্ত্রকারী, বেঈমান ও বিশ্বাসঘাতকদের বাঙালি জাতি কোনোদিন ক্ষমা করবে না। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে তাদেরকে ঘৃণা করে যাবে।
গতকাল মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ১৩টি স্থানে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গণভোজ, দোয়া মাহফিল ও কয়েকটি স্থানে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষকলীগ সভাপতি মহাসীন মাখন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আল মাহমুদ বাবু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাড. গোলাম মাওলা তপন, কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম পলাশ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক আপন দাস প্রমুখ। এসময় পৌর এলাকার হাটলক্ষ্মীগঞ্জ, ইদ্রাকপুর, সুপার মার্কেট, মোল্লা ক্লিনিক, খালইষ্ট, যোগিনীঘাট, পাঁচঘরিয়া কান্দি, মুন্সিরহাট, দেওভোগ, রনছরুহিতপুর, মানিকপুর ও ল্যাবএইড হাসপাতাল চত্বরে গণভোজ, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন তিনি।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক। তিনি বাংলার মাটি ও মানুষের পরম আপনজন, শত বছরের জেঁকে বসা ঘোর নিশীথিনীর তিমির বিদারী অরুণ, ইতিহাসের বিস্ময়কর নেতৃত্বের কালজয়ী স্রষ্টা, ইতিহাসের মহানায়ক, বাঙালি জাতির বিমূর্ত ইতিহাস, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। বাঙালি জাতির পিতা। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। আমাদের অন্তহীন প্রেরণার উৎসÑ আধুনিক সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নসারথী। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট কালরাতে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রে মানবতার দুশমন প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতকদের গুলিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। এই পৈশাচিক হত্যাকান্ড বাঙালি জাতিকে ইতিহাসের চিরস্থায়ী কালিমা লেপন করে। বাঙালি জাতির অগ্রগতিকে পিছিয়ে দিয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘৃণ্য খুনি, ষড়যন্ত্রকারী, বেঈমান ও বিশ্বাসঘাতকদের বাঙালি জাতি কোনোদিন ক্ষমা করবে না। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে তাদেরকে ঘৃণা করে যাবে।
তিনি বলেন, জাতির পিতাকে শুধু সপরিবারে হত্যাই নয়Ñ এই হত্যাকান্ডের বিচারের পথও বন্ধ করেছিল ঘাতকচক্রের হোতা মোশতাক-জিয়াচক্র। ইতিহাসের ঘৃণিত কালো আইন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করে খুনি মোশতাক ও জিয়াউর রহমান চক্র। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের যাতে বিচারের সম্মুখীন হতে না হয় সেজন্য খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদ ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে অন্যতম জেনারেল জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে উক্ত অধ্যাদেশটি সংসদে অনুমোদনক্রমে আইনে পরিণত করা হয়। সেদিন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি শুধু সংবিধান লঙ্ঘন করেনি, তা একইসঙ্গে সার্বজনীন মানবাধিকার সনদও লঙ্ঘন করেছে।
তিনি বলেন, কোনো সভ্য মানুষ, বিচার-বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি এ ধরনের কালো আইন করে একটি জঘন্যতম হত্যাকান্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করতে পারে না। কতটা পাশবিক হৃদয়ের হলে মানুষ এমন ইনডেমনিটি জারি করতে পারে? সেই পাশবিক অপশক্তির কোনো গণতান্ত্রিক বা মানবিক অধিকার থাকতে পারে নাÑ কারণ তারা এই অধিকারকে ধারণ করে না। বাংলাদেশে সত্যিকার গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের উত্তরসূরী বিএনপি-জামাত অশুভ জোটকে রাজনীতি থেকে নির্বাসনে পাঠাতে হবে। তাহলেই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুমহান আদর্শের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলা সম্ভব হবে।