নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুমহান আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে দেশবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। ত্রিশ লাখ শহীদের স্বপ্ন-সাধ বাস্তবায়নে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বিএনপি-জামাতের সকল ধরনের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও সহিংতার বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক নাগরিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির ৩০তম দিনে গতকাল ৩০ আগস্ট মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার হাটলক্ষ্মীগঞ্জ নূরে মোহাম্মদ (সা.) মাদ্রাসা ও এতিমখানার উদ্যোগে দোয়া, মিলাদ, এতিমদের মাঝে খাদ্য বিতরণ ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। সভায় সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর ও পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি মকবুল হোসেন। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তৃতা করেন- মুফতি সারওয়ার হোসেন, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি আব্দুস সবুর, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা তপন, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি আল মাহমুদ বাবু, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আরিফুর রহমান, শ্রমিকলীগ শিল্পাঞ্চল আঞ্চলিক শাখার সভাপতি আবুল কাশেম, আউলাদ হোসেন, শামীম হোসেন প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতা নামক মহাকাব্যের মহানায়ক। বাঙালির স্বাধিকার, স্বাধীনতা ও মুক্তির আন্দোলনে সারাজীবন তিনি সংগ্রাম করেছেন। বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন ভূ-খন্ড; স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। এজন্য অসীম ত্যাগ-তিতিক্ষা, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে। জীবনের ১৪টি বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। দুইবার ফাঁসির মুখোমুখি হয়েছেন। তিনি জীবনের সকল অনুভূতি ও ভালোবাসাকে বাংলার জনগণের জন্য উৎসর্গ করেছেন। অথচ এই দেশের কিছু বেঈমান-বিশ^াসঘাতক কুলাঙ্গার জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, খুনি ও ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যাই করেনি, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার পর্যন্ত হতে দেয়নি। এমনকী ঘাতকদেরকে বিদেশী দূতাবাসে চাকুরি পুরস্কৃত পর্যন্ত করা হয়েছে। নরঘাতক মোশতাক-জিয়া চক্র বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সুরক্ষায় ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে এবং পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে তা আইনে পরিণত করে। ১৫ই আগস্টের মতো নির্মম-নৃশংস হত্যাযজ্ঞের বিচারের পথকে রুদ্ধ করতে যারা ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশ জারি করে এবং তা আইনে পরিণত করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করতে পারে প্রত্যেকটি দেশপ্রেমিক বাঙালি জাতি তাদেরকে চিরদিন ধিক্কার জানাবে। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মতো পাশবিক মানসিকতার ঘৃণিত স্বৈরাচারের উত্তরসূরীদেরও ইতিহাস ক্ষমা করবে না। প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাদের ঘৃণা জানাবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিরা ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্টের পর রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালিত করে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কর্মকান্ডকে রাষ্ট্রীয়ভাবে লালনপালন করতে থাকে। তাদের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকান্ডের উত্তরাধিকার বহন করে চলেছে। ত্রিশ লাখ শহীদের স্বপ্ন-সাধ বাস্তবায়নে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বিএনপি-জামাতের সকল ধরনের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও সহিংতার বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক নাগরিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।