বঙ্গবন্ধু বিশে^র শোষিত-বঞ্চিত মুক্তিকামী মানুষের চিরঞ্জীব অনুপ্রেরণার উৎস Ñ অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশে^র শোষিত-বঞ্চিত মুক্তিকামী মানুষের চিরঞ্জীব অনুপ্রেরণার উৎসÑ তিনি ছিলেন জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা, জগতখ্যাত এক শান্তি সংগ্রামী। সারাজীবন তিনি শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির শেষদিনে মুন্সীগঞ্জ শহরে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। মুন্সীগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি জালাল উদ্দিন রুমি রাজনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহতাব উদ্দিন কল্লোল, মিসেস মেহজাবিন, জেলা যুবলীগ সভাপতি আক্তারুজ্জামান রাজিব, শামীম হাওলাদার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা তপন, কাউন্সিলর মকবুল হোসেন প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক। তিনি বাংলার মাটি ও মানুষের পরম আপনজন, শত বছরের জেঁকে বসা ঘোর নিশীথিনীর তিমির বিদারী অরুণ, ইতিহাসের বিস্ময়কর নেতৃত্বের কালজয়ী স্রষ্টা, ইতিহাসের মহানায়ক, বাঙালি জাতির বিমূর্ত ইতিহাস, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মময় জীবনের কেন্দ্র ছিল জনগণ। জনগণের জন্য ভালোবাসা ছিল তার সব কর্মকান্ডের প্রেরণা, জনগণের ওপর বিশ্বাস ছিল তার কর্মকান্ডের ভিত্তি এবং জনগণের কল্যাণই ছিল তার সব কর্মকান্ডের লক্ষ্য। নির্যাতিত-নিপীড়িত, লাঞ্ছিত-বঞ্চিত-শোষিত মানুষের মুক্তিই ছিল বঙ্গবন্ধুর জীবনের একমাত্র ব্রত।
তিনি বলেন, পর্বতের ছবি কাগজে আঁকা যায়, মুছেও ফেলা যায়। কিন্তু বাংলার সিথানে যে দাঁড়িয়ে আছে হিমালয়, তাকে মুছে ফেলা যায় না। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকেও নয়। তার সংগ্রামকেও নয়, তার অর্জনকেও নয়।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন, চীনের মাও সেতুং, ভিয়েতনামের হো চি মিন, ভারতের মহাত্মাগান্ধী, ইন্দোনেশিয়ার সুকর্ণ, আফ্রিকার প্রণম যুক্ত উপনিবেশ ঘানার প্রেট্রিস লুলম্বা, নক্রুমা, দক্ষিণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা, নামিবিয়ার স্যাম নওমা, রাশিয়ার লেনিন, যুগোস্লাভিয়ার মার্শাল টিটো আর বাংলাদেশে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, ইতিহাসের রাখাল রাজা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নামে এঁরা এক না হলেও কীর্তিতে এঁরা এক, গৌরবে এরা ভাস্বর। যে নাম শেখ মুজিবÑসে নামের সাথে মিশে আছে বাংলা, বাঙালি আর বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, তিনি এমন একজন বিশ^বরেণ্য নেতা ছিলেন- যার নেতৃত্ব, সাহস, সততা, দক্ষতা, কৌশল, দূরদর্শিতা, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী সম-সাময়িক বিশ^নেতৃবৃন্দকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। তিনি ছিলেন বিশ্ব মুক্তিকামী মানুষের অন্যতম পথিকৃৎ, অকৃত্রিম সুহৃদ, নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের জাগরণের অনুপ্রেরণা, সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ উপনিবেশবাদ, নয়া উপনিবেশবাদ ও বর্ণ বৈষম্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াকু বীরসেনানী, জোট-নিরপেক্ষ তৃতীয় বিশ্বের অনন্য প্রবক্তা নিরস্ত্রীকরণে বিশ্বাসী শান্তিরদূত, জুলিও কুরি পদক বিজয়ী শান্তি সংগ্রামী। তিনি হয়ে উঠেছিলেন বিশে^র লাঞ্ছিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত-শোষিত মানুষের মুখপাত্র। ১৯৭৩ সালে আলজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- ‘বিশ্ব আজ দু’ভাগে বিভক্ত- শোষক ও শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।’ তিনি বলেছিলেন, ‘আমার অবস্থা যদি চিলির আলেন্দ্রের মতোও হয় তবুও আমি সাম্রাজ্যবাদের কাছে মাথা নত করবো না।’