প্রতিটি মুক্তিকামী হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবেন বঙ্গবন্ধু – অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, আমরা শুধু বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার করতে পেরেছি। কিন্তু নেপথ্যে যারা ছিলেন তাদের খুঁজে বের করা হচ্ছে। বিএনপি জিয়ার লাশের খোঁজ পেয়েছেন। তাহলে ছবি কোথায়? ব্যক্তি জিয়ার সঙ্গে আমার কোনো অভিযোগ নাই। কিন্তু প্রকৃত ইতিহাসের স্বার্থে এই সত্য সকলের জানা দরকার।’ তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের লাশ পাওয়া যায়নি। সেই কফিনের মধ্যে কী ছিল, মানুষ ছিল না অন্যকিছু ছিল, সেটা আল্লাহ মালুম… জানি না। একটা কাঠের বাক্স সেখানে দাফন করেছে। চন্দ্রিমা উদ্যানের কবরে কার লাশ, তা শনাক্তের কথা বলেন তিনি।
গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কেন্দ্রীয় সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের যৌথ আয়োজনে “বঙ্গবন্ধুর দর্শন হত্যা রোধে করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, ইতিহাসের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক কালজয়ী নাম। বিশ^বাঙালির গর্বÑ মৃত্যুঞ্জয়ী মহামানব। তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা ও বাঙালি মানসে জাতীয়তাবোধ সৃষ্টির নির্মাতা। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং সীমাহীন ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে তিনি বাঙালি জাতির জন্য একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর অবিনাশী নেতৃত্বেই হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পায় বাংলাদেশ; মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। পরাধীনতার নিকষ অন্ধকারে নিমজ্জিত বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে উদিত হয় মুক্তির প্রদীপ্ত প্রভাকর।
তিনি বলেন, খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে কিন্তু বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু ও বাঙালি জাতির অবিভাজ্য সম্পর্কের কোন পরিসমাপ্তি নেই। বাংলা ও বাঙালি যতদিন থাকবে, এই পৃথিবী যতদিন থাকবে, পৃথিবীর ইতিহাস যতদিন থাকবে তিনি একইভাবে প্রজ্জ্বলিত হবেন প্রতিটি বাঙালি হৃদয়েÑ প্রতিটি মুক্তিকামী-শান্তিকামী মানবতাবাদী হৃদয়ে। বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন চিরকাল বাঙালি জাতিকে অনুপ্রাণিত করবেÑ পথ দেখাবে। বাঙালি জাতি শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও ভালবাসায় বাংলাদেশের ইতিহাস বিনির্মাণের কালজয়ী এ মহাপুরুষকে চিরকাল স্মরণ করবে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাজীবন এদেশের মাটি ও মানুষের অধিকার আদায় ও কল্যাণের জন্য সংগ্রাম করেছেন। বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য জীবনের ১৪টি বছর পাকিস্তানি কারাগারের অন্ধপ্রকোষ্ঠে বন্দি থেকেছেন, দুইবার ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু আত্মমর্যাদা ও বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের প্রশ্নে কখনো মাথা নত করেননি, পরাভব মানেন নি।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্টে নরপিশাচ খুনিরা জাতির পিতাকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইন জারি করে। ইতিহাসের ঘৃণিত কালো আইন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি অতঃপর বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করে খুনি মোশতাক ও জিয়াউর রহমান চক্র। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট থেকে দীর্ঘ ২১ বছর বাঙালি জাতি বিচারহীনতার কলঙ্ককের বোঝা বহন করতে বাধ্য হয়। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকার বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘাতকদের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করে।
সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের সাব-কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন বীরবিক্রম। মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কেন্দ্রীয় সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের যুগ্ম-মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারী, ঢাকা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবু সাঈদ মিয়া, ঢাকা মহানগর সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভঅপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোহাম্মদ আসালত, প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ পিন্টু, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ড. প্রকৌশলী এম. এম সিদ্দিক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. সাজ্জাদ হায়দার, আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিন খসরু, স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রচার সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বিটু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মো. রফিকুল আলম গাফ্ফারী রাসেল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস প্রমুখ।
বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে যারা তাদের খুঁজে বের করা হচ্ছে – মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক
আগের পোস্ট