নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহসী নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৪ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের স্ফুলিঙ্গে উজ্জীবিত ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গণভোজ এবং খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। এসময় বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে আটপাড়া, শুয়াপাড়া, পুকুরপাড়া, বজ্রযোগিনী বাজার, চূড়াইন, আজিমপুড়া, মদিনাবাজার, ভাঙ্গা, রামশিং, সাত্রাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় মানুষের মাঝে চাল, ডাল, তেল, লবণ, আলুসহ খাদ্যসামগ্রী ও গণভোজ বিতরণ করেন তিনি। এসময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের এবং ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এসব কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা তপন, কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শেখ জাহাঙ্গীর আলম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি রবিন হোসেন, জেলা পরিষদ সদস্য আরিফুর রহমান, গোলাম রসুল সিরাজী রোমান, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শেখ মোহাম্মদ রাজেকুল শেখ, আবুল কাশেম তারা, জিয়াসমিন আক্তার, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ফিরোজ মোল্লা, সহ-সভাপতি সমশের আলী বেপারী, জাতীয় শ্রমিক লীগ শিল্পায়ন আঞ্চলিক শাখার সভাপতি আবুল কাশেম, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক আপন দাস, মেহেদী হাসান মিশু, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম পলাশ প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহসী নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৪ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের স্ফুলিঙ্গে উজ্জীবিত ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা। তিনি তাঁর সকল অনুভূতি আর উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ত্যাগ ও সংগ্রামের মধ্য দিয়েÑ তার বীরত্বপূর্ণ নেতৃত্ব, বাঙালি জাতির প্রতি তার গভীর ভালোবাসা, মমত্ববোধ, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপসহীন রাজনৈতিক আদর্শ বাঙালি জাতির মধ্যে দেশপ্রেম সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিলÑ তিনি সাড়ে সাত কোটি মানুষকে মুক্তির মন্ত্রে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। রাজনৈতিক সংগ্রাম, অদম্য স্পৃহা, দৃঢ় প্রত্যয়, বীরত্বপূর্ণ আপসহীন নেতৃত্ব, আত্মত্যাগের মন্ত্রে সকলকে উজ্জীবিত করে বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য লড়াই করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্য একটি স্বাধীন ভূ-খন্ড প্রতিষ্ঠায় চূড়ান্ত আত্মত্যাগে প্রতীজ্ঞ বঙ্গবন্ধু অন্যায়, অত্যাচার ও প্রলোভনের কাছে মাতা নত করেননি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮-এ ছাত্রলীগের জন্ম, ১৯৪৮-এ ছাত্রলীগের ১০ দফা দাবি, ’৪৮-এর মার্চে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার প্রতিবাদে আন্দোলন, ’৪৯-এর ২৩ জুন আওয়ামী লীগের জন্ম, ’৫০-এর ২৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলে সাত রাজবন্দীকে গুলি করে হত্যা, ’৫০-এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৬-তে দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিষ্ঠা, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৪-এর দাঙ্গা, ’৬৫-এর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ, ’৬৬-এর ৬-দফা, ’৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ও ১১-দফা, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচনে গণচেতনার ইশতেহার ‘আওয়ামী লীগ’-এর নিরঙ্কুশ বিজয় নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রবাহমান রাজনৈতিক সংগ্রাম স্বাধীনতা অর্জনের আকাক্সক্ষাকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে এগিয়ে নেয়। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ স্বাধীনতা অর্জনের অগ্নিশপথে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেন। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করলে শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বাঙালির অসীম ধৈর্য্য, দৃঢ় সংকল্প ও বীরত্বের কাছে পরাজয় বরণ করে পাকহানাদাররা।
তিনি বলেন, এদেশের মানুষের মৌলিক মানবাধিকার থেকে শুরু করে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, মুক্তি সর্বোপরি উন্নয়ন-সমৃদ্ধি সকল কিছুই অর্জিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির সভ্যতা, সংস্কৃতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, শান্তিময় জীবনের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন।