নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ বিশ্বে শান্তির সংস্কৃতি প্রচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, এটি আসলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তির দর্শন। বঙ্গবন্ধু জনগণের প্রাত্যহিক জীবনে স্বাধীনতা চেয়েছিলেন, যেখানে তারা নিপীড়ন, ক্ষুধা, অপুষ্টি, অজ্ঞতা ও ঘৃণা থেকে নিরাপদ থাকতে পারবে।
শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। আবুধাবিতে মর্যাদাপূর্ণ এমিরেটস সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিশ্ব শান্তি ও বিশ্ব নিরাপত্তা বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভিশন তুলে ধরা হয়।
এসময় মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু আইনের শাসনকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। এমনকি তার দৃষ্টিভঙ্গি, তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যের বিরোধিতার জন্য যখন একই নিয়ম ও আইনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছিল, তখনও বঙ্গবন্ধু কখনই পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে হিংসা বা ঘৃণার আশ্রয় নেননি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টির কথা উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, শেখ হাসিনার বিশ্ব ও বিশ্ব শান্তির দর্শন বঙ্গবন্ধুর দর্শনেই নিহিত। তিনি বলেন, ২০১১ সালে জাতিসংঘের ৬৬তম সাধারণ অধিবেশন চলাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্র ও জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য বিশ্বকে ছয়দফা বহুমাত্রিক শান্তিকেন্দ্রিক উন্নয়ন মডেল তুলে ধরেন। তার প্রস্তাবিত মডেলের ছয় দফায় ছিল- দারিদ্র ও ক্ষুধা নির্মূল, বৈষম্য হ্রাস এবং লাভজনক কর্মসংস্থান, বঞ্চনার প্রশমন, বাদপড়া ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি, মানব উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ, শিক্ষা ও প্রযুক্তি প্রদান এবং সন্ত্রাস নির্মূল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কূটনীতি হলো-নমনীয় ও অভিযোজনক্ষম পরিকল্পনাসহ সিস্টেম ডিজাইন করা, মাল্টি-লেভেল নেটওয়ার্ক হোস্ট করার ক্ষমতাসহ অবকাঠামো উন্নয়ন এবং উন্নত প্রযুক্তিগত দক্ষতা তৈরি এবং বজায় রাখার জন্য সক্ষমতার বিকাশ।
এর আগে এদিন সংযুক্ত আরব আমিরাত সফররত শীর্ষস্থানীয় লুলু গ্রুপের চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় সংযুক্ত আরব আমিরাত, উপসাগর, ইউকে এবং ইইউ অঞ্চলগুলোর মধ্যদিয়ে দেশের উৎপাদন ক্ষমতা বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের সঙ্গে একীভূত করার সম্ভাবনা বিষয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আইআরইএনএ’র মহাপরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যেখানে উভয়পক্ষ নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন করার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। ড. মোমেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও বৈঠক করেন এবং বিজনেস কাউন্সিলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।