আমিরুল ইসলাম নয়ন : মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আওয়ামী লীগ দলীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান প্রধানকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্র-জনতা। এসময় তারা উচ্চ আদালতের রায়ে বাউশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাওয়া মোঃ মিজানুর রহমান প্রধানকে প্রতিহতের ঘোষণা দেন।
খবর নিয়ে জানা যায়, গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় মধ্য বাউশিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে ছাত্র-জনতা। কর্মসূচিতে একাত্মতা পোষণ করে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল মেম্বার, আশরাফুল ইসলাম সবুজ, উপজেলা শ্রমিক দলনেতা আব্দুল মান্নান মিয়াজী, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান প্রধান স্বেচ্ছাসেবক লীগ গজারিয়া উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি পদে ছিলেন। গত বছর ৪ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করতে মাঠে ছিলেন তিনি। চেয়ারম্যান পদে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও বারবার উচ্চ আদালতে রিট করে আইনের বিভিন্ন ফাঁক-ফোঁকর কাজে লাগিয়ে চেয়ারম্যান পদে বহাল ছিলেন তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলন চলাকালীন সময়ে তার নেতৃত্বে একাধিকবার গজারিয়ার বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার উপর হামলা হয়। ৫ আগস্টের পর বাধ্য হয়ে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় ১নং প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ এবাদুল হককে। তবে সম্প্রতি উচ্চ আদালতের এক আদেশে চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পান মোঃ মিজানুর রহমান প্রধান। স্থানীয় কিছু লোকদের ম্যানেজ করে তিনি আবার পরিষদে বসতে চাচ্ছেন, তবে ছাত্র-জনতা তা মেনে নিবে না। জনগণকে সাথে নিয়ে তাকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা জহিরুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গজারিয়ার একাধিক স্থানে ছাত্রদের উপর চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান প্রধান হামলা চালায়। তার ছবি এবং ভিডিও চিত্র এখনো সবার মোবাইলে রয়েছে। এরকম একজন মানুষ কারাগারে না থেকে কিভাবে এখনো পর্যন্ত বাইরে ঘোরাফেরা করছে? অনতিবিলম্বে তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি আমি।
এ বিষয়ে বাউশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সুমন মিয়া জানান, এক আদেশে ১নং প্যানেল চেয়ারম্যান এবাদুল হককে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয় প্রশাসন। তবে উচ্চ আদালতে রিট করে এই আদেশের উপর তিন মাসের একটি স্থগিতাদেশ আনেন সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান প্রধান। তবে তার মেয়াদ গত ১৫ জুলাই শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে তিনি একদিন দাপ্তরিক কাজকর্ম করেছেন। এখন একটি সাংগঠনিক শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসন থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হবে আমরা সেভাবে দায়িত্ব পালন করবো। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবাদুল হক দায়িত্ব ফিরে পেতে আমার কাছে একটা লিখিত আবেদন করেছেন। বিষয়টি আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।