নিজস্ব প্রতিবেদক
শ্রীনগর ভাগ্যকুল স্কুল এন্ড কলেজ খেলার মাঠ ও একটি ভবনের শ্রেণিকক্ষে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে ৪ দিন ধরে শ্রেণিকক্ষ বন্ধ রেখে বিদ্যালয়ের অন্য ভবনে পাঠদান চলছে। অপরদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির খেলার মাঠে প্রায় হাঁটু পরিমাণ বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে বিষাক্ত ডেঙ্গু মশার বংশবিস্তারের আশঙ্কা করা হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাগ্যকুলের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ের পূর্বপাশে অধিকাংশ খেলার মাঠেই বৃষ্টির পানি জমে আছে। মাঠের উত্তর দিকে বিদ্যালয়ের একটি পুরাতন দ্বিতল ভবনের নিচতলায় পানি ঢুকে পড়েছে। এতে করে জুতা, স্যান্ডেল পায়ে ও পরনের কাপড় বাঁচিয়ে হেঁটে ওই শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করা সম্ভব নয়। এসময় লক্ষ্য করা যায়, বেশ কয়েকজন শিশু-কিশোর মাঠের পানিতে ভিজেই ফুটবল খেলছে। জিহাদ, তানজিম, নাঈম, আরাফাতসহ ওই বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন ছাত্র জানায়, সামান্য বৃষ্টি হলেই মাঠে পানি জমে যায়। মাঠের উত্তর দিকের ভবনটিতে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির ক্লাশ নেওয়া হয়। ভবনটির নিচতলায় ফ্লোরে পানি ঢুকে পড়ায় বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্লাশ একত্রে করে করে খালি এসব কক্ষে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাশ নেওয়া হচ্ছে। অপর একটি সূত্র জানায়, বিদ্যালয়ের মাঠে ঈদে কুরবানির ঈদে অস্থায়ী পশুর হাট দেওয়া হয়। হাট ইজারাদারদের স্বার্থে মাঠের কোন কোন অংশে মাটি ফেলার কারণে সমতল মাঠটি উঁচু-নিচুর সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক কোয়ার্টারে গিয়ে দেখা যায়, কোচিং পড়ানো হচ্ছে। আলাদা আলাদাভাবে কয়েকটি কক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানো হচ্ছে। এসময় ভাগ্যকুল হরেন্দ্রলাল স্কুল এন্ড কলেজের গণিতের শিক্ষক মো. হেলালউদ্দিন জানান, কোয়ার্টারে প্রায় ১৬/১৭ জন শিক্ষক থাকেন। অনেকেই কোচিং পড়ান। কি করবো? আমাদের কারণবশত কোচিং পড়াতে হয়। শ্রেণিকক্ষে জলাবদ্ধতার বিষয়ে তিনি বলেন, আজ স্কুল বন্ধ। তবে বিদ্যালয়ের অন্য ভবনে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। এসময় সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহআলমের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে আসছি বলে তিনি এড়িয়ে যান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য পারভেজ কবির জানান, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে বিদ্যালয়ের মাঠে খেলাধুলা বন্ধ থাকছে। শুনেছি জলাবদ্ধতা নিরসনে ওই শ্রেণিকক্ষের পিছন দিয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বরাদ্দ দিয়েছেন। তবে কাজের কোন অগ্রগতি না থাকায় এখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যালয়ের সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা মনির হোসেন মিটুল ড্রেনেজ ব্যবস্থার বিষয়ে জানান, আমার সময় জেলা পরিষদের ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। টেন্ডার হয়েছে কিন্তু কে টেন্ডার পেয়েছে বা কবে বাস্তবায়ন হবে তা আমি জানিনা। এ ব্যাপারে জানতে ভাগ্যকুল হরেন্দ্রলাল স্কুল এন্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির নব-নির্বাচিত সভাপতি সামসুল আলম সবজলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।