আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ব্রিটিশ ভারতীয় ঔপন্যাসিক সালমান রুশদিকে অস্ত্রোপচারের পর ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। তিনি কথা বলতে পারছেন না। তার এক এজেন্টের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অ্যান্ড্রু ওয়াইলি নামের সালমান রুশদির ওই এজেন্ট এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর রচয়িতা সালমান রুশদি একটি চোখ হারাতে পারেন। অ্যান্ড্রু আরও জানিয়েছেন , রুশদি এখনও কথা বলতে পারছেন না।
শুক্রবার নিউ ইয়র্ক থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে শতকা ইন্সটিটিউশনের মঞ্চে বক্তৃতা করতে ওঠার সময় হামলা চালানো হয় রুশদির ওপর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মঞ্চে ওঠার সময় বুকার জয়ী লেখক রুশদির উপর ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন হামলাকারী। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ বার ছুরির কোপ বসানো হয় লেখকের ঘাড়ে-বুকে-পেটে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হলে ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ হেলিকপ্টারে করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। গ্রেফতার করা হয় ২৪ বছর বয়সী হামলাকারী হাদি মাতারকেও। আপাতত পুলিশ হেফাজতেই রয়েছেন অভিযুক্ত।
ধারণা করা হচ্ছে রুশদির লেখা বিতর্কিত বই ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর কারণেই হামলা চালানো হয়েছে ৭৫ বছর বয়সী লেখকের ওপর। ওই বইয়ের কারণে নব্বইয়ের দশকে ইটালির মিলানেও রুশদির ওপর হামলা চালানো হয়। এমনকি, এই বইয়ের জাপানি অনুবাদক হিতোসি ইগারাসিকেও ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় টোকিওর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ইরানের ইসলামী বিপ্লবের প্রধান নেতা মরহম আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি এই বই রচনার জন্য ১৯৮৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডের ফতোয়া জারি করেন। তবে, তার মৃত্যুর পর ইরানের সরকার সেই ডিক্রি থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছে। কিন্তু ইরানসহ বিশ্বজুড়েই রুশদি-বিরোধী মনোভাব বজায় ছিল। কেউ রুশদিকে হত্যা করতে পারলে তাকে ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি পুরস্কারের ঘোষণাও দিয়েছে ইরান। ২০১২ সালে একটি আধা-সরকারি ইরানী ধর্মীয় ফাউন্ডেশন রুশদির জন্য দান ২.৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৩.৩০ মিলিয়ন করেছে। ২০০০ সালের পর থেকে রুশদি মূলত নিউইয়র্ক সিটির ইউনিয়ন স্কয়ার এলাকায় বাস করছেন।
সূত্র: বিবিসি