নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের চিত্র স্পষ্ট হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩১ জনের, আহত হয়েছেন আরও ১৬৫ জন।
আইএসপিআরের বিবৃতি অনুযায়ী, নিহতদের বেশিরভাগই শিশু এবং শিক্ষার্থী, যাদের অনেকেই ক্লাস চলাকালে বা স্কুল ভবনের আশপাশে অবস্থান করছিলেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য রাজধানীর অন্তত দশটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঢাকা সিএমএইচে ২৮ জন আহত ও ১৬ জন নিহতের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত একটি হাসপাতালে সর্বোচ্চ প্রাণহানির সংখ্যা। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি ৪৬ জনের মধ্যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ জন আহত ও ১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৬০ জন, যাদের মধ্যে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে ১৩ জন আহত ও ২ জন নিহত হয়েছেন। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ইউনাইটেড হাসপাতালেও আহতদের চিকিৎসা চলছে। ইউনাইটেড হাসপাতালে ২ জনের মধ্যে ১ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে, একই দিন সকালে প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান জানিয়েছিলেন যে, এই ঘটনায় ২৭ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৫ জনই শিশু। বিকেল নাগাদ আইএসপিআরের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩১ জনে।
বিমানটি ছিল বিমানবাহিনীর এফটি-৭ বিজিআই মডেলের একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান, যা জনবহুল আবাসিক এলাকার স্কুল ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এতে স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও আশপাশের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ও শোকের ছায়া নেমে আসে। ঘটনাস্থলে আগুন, ধোঁয়া ও ধ্বংসস্তুপের মধ্য থেকে উদ্ধার তৎপরতা চালায় সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস।
এ ঘটনায় জাতীয় পর্যায়ে শোক এবং ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে এরইমধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
মাইলস্টোনে বিমানবিধ্বস্তে প্রাণহানির সংখ্যা ৩১, আহত ১৬৫: আইএসপিআর
আগের পোস্ট