মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, যৌতুক, ধর্ষণ ও দুর্নীতির মতো অপরাধমুক্ত মুন্সীগঞ্জ দীর্ঘদিনের দাবি এলাকাবাসীর। এই দাবির প্রেক্ষিতে অপরাধ দমনে সাহসী ভূমিকা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ধরা পড়ছে এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িতরা। তাই মাদক ও অপরাধমুক্ত মুন্সীগঞ্জ গড়ে তুলতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি সকলের এগিয়ে আসা জরুরী বলে জানিয়েছেন এ জেলার সুধীজন ও অভিজ্ঞমহল। সচেতন মহল মনে করেন, যারা এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত তারা এ সমাজেরই মানুষ। কাজেই সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমেও সমাজকে দুর্নীতি মুক্ত করা যাবে বলে তারা জানিয়েছেন। এলক্ষ্যে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে ঘরে ঘরে অপরাধ দমনে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে। গ্রামে গ্রামে অপরাধ নির্মূল কমিটি গঠন করতে হবে। যারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, মাদকাসক্তের সাথে যারা জড়িত তাদের সামাজিকভাবে চিহ্নিত করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করতে হবে। তাহলেই মাদকের সঙ্গে জড়ানো ও অপরাধ করলে আর রক্ষা নেই সেই সচেতনতাবোধ প্রতিটি মানুষের মনে জাগ্রত হবে। সমাজ থেকে চিরতরে নির্মূল হবে মাদক, সন্ত্রাস, ধর্ষণ, বাল্য ও বহুবিবাহ, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির মতো অপরাধ এমনটিই জানিয়েছেন সমাজের বিজ্ঞমহল।
মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, পৌর মেয়র, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, আইনজীবী, পেশাজীবী সবার পক্ষ থেকেই অপরাধমুক্ত মুন্সীগঞ্জ গড়ে তোলার দাবি দিনদিনই জোরদার হচ্ছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান, সমাবেশ ও আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ বিষয়গুলো বক্তৃতায় উঠে আসছে। মুন্সীগঞ্জকে মাদক, সন্ত্রাস, যৌতুক ও দুর্নীতিমুক্ত ঘোষণা করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আরও একবার গর্জে উঠার আহ্বান জানানো হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল অপরাধ, অর্থনৈতিক দৈন্যতা, পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্ত একটি বাংলাদেশ গড়ে তোলা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে প্রয়োজন অপরাধ ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও মুন্সীগঞ্জকে অপরাধমুক্ত করতে সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
তবে এ জেলাবাসীর জন্য সবচেয়ে দুঃসংবাদ হচ্ছে মুন্সীগঞ্জ দিনদিনই মাদকের আগ্রাসনে পরিণত হচ্ছে। হাত বাড়ালেই মেলে মাদক। আর মাদকের নেশায় ধ্বংস এ জেলার উঠতি যুবসমাজ। সারা দেশের মতো এ জেলাতেও প্রতিদিন মাদকের নানা দংশনের শিকার হচ্ছে যুবসমাজ, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মাদকের কারণে এ জেলায় শত শত যুবক ও তাদের পরিবার আজ ধ্বংসের পথে। সমাজে রয়েছে নানা অনাচার, অবিচার, সন্ত্রাস, নারী নির্যাতনসহ নানা ধরনের অপরাধ। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এবং মুন্সীগঞ্জ মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও হিমশিম খাচ্ছে। তাই এই জটিল ও কঠিন সমস্যা শুধু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর ছেড়ে দিয়ে সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া যাবে না এমনটিই মন্তব্য করেছেন মুন্সীগঞ্জের সচেতন মহল। মাদক দ্রব্য ও দুর্নীতির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা জরুরী হয়ে পড়েছে বলে দাবী সচেতন মহলের।
মুন্সীগঞ্জের গণমাধ্যমকর্মীদেরও নিজ এলাকাকে মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত করতে লেখনীর মাধ্যমে ভূমিকা রাখতে হবে। তবেই মুন্সীগঞ্জ হবে মাদক দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মতো অপরাধমুক্ত দেশের সেরা জেলা। এ জেলা হবে শান্তির শহর ও নিরাপদ বসবাসের স্থান।