নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামে জুয়েল মাঝি (৩২) কে কুপিয়ে ৯২টি সেলাইয়ের ঘটনায় মামলার প্রধান দুই আসামি মো. মোতা গাজী ও আতা গাজীসহ ছয় আসামির নাম বাদ দিয়ে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। ক্ষোভ জানিয়ে এমনটাই অভিযোগ করেন মামলার বাদি মো. জুয়েল মাঝি। এছাড়া মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মোতা গাজী ও আতা গাজী বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। এদিকে এ মামলা থেকে জামিনে বের হওয়া দুই আসামি সুজন ও সানি মিলে জুয়েল মাঝির বাড়িতে লাঠিসোটা নিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। পরে জুয়েল মাঝি পুলিশের আশ্রয় নেন। এজাহার থেকে জানা গেছে, সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামে জালাল মোল্লার বাড়িতে প‚র্বশত্রæতার জেরে গত ২৬ জুলাই হোগলাকান্দি গ্রামের গিয়াসউদ্দিন মাঝির ছেলে জুয়েল মাঝি (৩২) কে রাত ১০টার দিকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে একই গ্রামের হাবিব গাজীর ছেলে মোতা গাজী, আতা গাজী, মনি গাজী, মোতা গাজীর ছেলে মোস্তফা গাজী, মনির গাজীর ছেলে শ্যামল গাজীসহ একটি সংঘবদ্ধ দল। এ ঘটনায় জুয়েল মাঝির শরীর ও মুখে সেলাই করা হয়। পরে জুয়েল মাঝি বাদি হয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় ১১ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পরে এ মামলার তদন্তকারী পুলিশের উপপরিদর্শক (এস.আই) মো. ফরিদুজ্জামান মামলার প্রধান দুই আসামি মো. মোতা গাজী ও আতা গাজীসহ ছয়জনের নাম বাদ দিয়ে পাঁচজনকে আসামি করে গত ১০ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। জুয়েল মাঝি বলেন, মোতা গাজী, আতা গাজী, মনি গাজী, মোতা গাজীর ছেলে মোস্তফা গাজী, মনির গাজীর ছেলে শ্যামল একটি সংঘবদ্ধ দল মিলে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। আমি তাদের নাম উল্লেখ করে মামলা করি। কিন্তু মূল আসামীদের নাম বাদ দিয়ে মামলার তদন্তকারী পুলিশের উপপরিদর্শক (এস আই) মো. ফরিদুজ্জামান চার্জশিট দাখিল করেছে। সে আরো বলেন, দায়ের করা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মামলার ১নং আসামী মোতা গাজী ও ২নং আসামী আতা গাজী আমাকে একাধিকবার হুমকি ধমকি প্রদান করে আসছে। আমার নিরাপত্তার কথা ভেবে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেছি। যার নং ৩৫২ তাং ০৭/০৯/২১ইং। একই গ্রামের আয়নাল ফকির বলেন, আমার বাড়িতে গত বছর পাকা বিল্ডিং ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করলে আতা গাজী ও মোতা গাজী আমার নিকট ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। আমি টাকা না দিলে ওরা আমাকে মারধর করে। পরে আমি মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করেছি। সেই মামলা এখনো চলমান রয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী মুন্সীগঞ্জ সদর থানার পুলিশ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফরিদুজ্জামান বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি একজনকে গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। মামলার প্রধান দুই আসামিসহ ছয় আসামির নাম বাদ দিয়ে চার্জশিট গঠন করার বিষয়ে তিনি আরো বলেন, এ ঘটনাটি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও আমি পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে যাচাই বাছাই করেছি। তদন্তের স্বার্থে আসামীদের বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ ও মোবাইল কললিস্ট যাচাই করেছি। এ ঘটনার সাথে তারা কোনভাবে জড়িত ছিলো না বলে চার্জশিট থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়।