নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেল করোনা ভাইরাসে বাংলাদেশ তথা পুরো বিশ্ব বাজারে যে অর্থনৈতিক ধস নেমেছে তার লোকসান গুনতে হয়েছে ছোট বড় সব প্রতিষ্ঠানকে। আর তার প্রভাব জনজীবনে অনেকটাই বিস্তার করছে। সরকারের প্রতিটি সেক্টরে করোনাকালীন সময়ে যে বিধি-নিষেধ ছিল এখন তার পরিবর্তন হয়ে আগের অবস্থানে ফিরেছে। গণপরিবহনে যে বাড়তি ভাড়ার আইন ছিল এখন তা সংশোধন করে পূর্বের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু করোনাকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাট থেকে নারায়নগঞ্জ রুটে চলাচলকারী প্রতিটি লঞ্চ যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। পূর্বের টিকেটের মূল ভাড়া ২য় শ্রেণি ২০ টাকা ছিল সাধারণ যাত্রীদের ও কেবিনে ছিল ৩০ টাকা। কোভিড-১৯ মহামারিতে সীমিত পরিসরে চলাচলের জন্য ভাড়া বৃদ্ধির পর বিগত পহেলা সেপ্টেম্বর গণপরিবহনে সরকারের নির্দেশনাবলী মেনে আগের ভাড়ায় চলে আসে। সরকারের সেই নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করেই দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে এ রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। করোনাকে পুঁজি করে লঞ্চ মালিক কর্তৃপক্ষ এ কয়েক মাসেই কামিয়েছেন কয়েক লাখ টাকা। টিকিটের গায়ে ২য় শ্রেণির ভাড়া ২০ টাকা উল্লেখ থাকলেও তা নেওয়া হচ্ছে ২৫ টাকা করে। বিলাসের ভাড়া টিকিটে ৩০ টাকা উল্লেখ থাকলেও নেওয়া হচ্ছে ৩৫ টাকা করে। সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রতিনিয়ত যাতায়াতকারী আঃ রহিম, সুজন, মামুন, স্বপন, রিপনসহ বেশ কিছু যাত্রীদের সাথে কথা বললে এ তথ্য পাওয়া যায়। লঞ্চযাত্রী আব্দুর রহিম জানান, আমরা আগের ভাড়া নেওয়ার কথা বললে তারা তা নিতে রাজি হয় না। লঞ্চ স্টাফসহ কেরানীরা জানান, মালিক কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনেই তারা ভাড়া আদায় করছেন এবং বাড়তি ভাড়া আদায়ে ব্যর্থ হলে চাকরি থেকে বাদ দেওয়ারও ভয় দেখান কিছু লঞ্চ মালিক। এমনটাই অভিযোগ করছেন লঞ্চ কেরানীরা। দেশে লকডাউন না থাকা সত্ত্বেও এবং সরকারের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এখন পর্যন্ত যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টির সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সরকরের সিদ্ধান্তকে পাত্তা না দিয়ে লঞ্চ মালিকগণের সিদ্ধান্তে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ বাদল মিয়ার সাথে মোবাইলে কথা বললে তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ রুটে চলাচলকারী লঞ্চ মালিকদের সাথে কথা বলে অচিরেই এ বিষয়টির সুরাহার চেষ্টা চলছে। তিনি আরো জানান, খুব শীঘ্রই আগের ভাড়া আদায়ের নীতিমালা তৈরি করে তা ঘোষণা করা হবে। প্রতিদিন মুন্সীগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জ রুটে দুই থেকে তিন হাজার যাত্রী চলাচল করে। ব্যস্ততম এ বন্দরের লঞ্চ মালিকদের নিয়মনীতির পরিবর্তন ও অবিলম্বে পূর্বের ভাড়া আদায়ের নীতিমালাকরণে জোর দাবি জানান এ রুটে চলাচলকারী সকল যাত্রীগণ।