নিজস্ব প্রতিবেদক
‘মুষ্টিমেয় জনগোষ্ঠীর জন্য অর্থনীতি নয়। একটি দেশের আর্থিক খাত কতিপয় মানুষের জন্য কাজ করতে পারে না। অর্থনীতি দেশের সকল মানুষের জন্য কাজ করলেই তাকে অর্ন্তভুক্তিমূলক অর্থনীতি বলা যায়। আর এর মাধ্যমেই সামাজিক পরিবর্তন আসবে’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড.আতিউর রহমান।
রবিবার রাতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট বিআইবিএম আয়োজিত ১৯ তম নুরুল মতিন মেমোরিয়াল লেকচার ২০২০ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য ছিল এথিক্স ইন ব্যাংকিং। তিনি আরো বলেন, বাজার, রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। এর জন্য আর্থিক খাতের প্রতিটি টাকা নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে। আর এই ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে নতুন উদ্যোক্তা, নারী উদ্যোক্তা, কৃষিঋণ ও সবুজ ব্যাংকিং। আতিউর রহমান জানান, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় ১২ শতাংশ। টাকার অংকে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। এই তালিকায় সরকারি ব্যাংকগুলোই ক্ষতিগ্রস্থ বেশি। একটি দেশের অর্থনীতির জন্য এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। অতিরিক্ত ঋণ খেলাপের কারণে ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী মূলধন সংরক্ষণ, অ্যাডভান্স ডিপোজিট (এডিআর) সমন্বয় এবং তারল্য ব্যবস্থাপনায় প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। চাপ কমাতে ব্যাংকিং খাতের উপর আস্থা ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতে হবে। নয়-ছয় সুদহার বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে আতিউর রহমান বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আগে কেনিয়ার পরিস্থিতি বিবেচনা করা উচিত। আমি বলছি না এই পরিবর্তন করতে হবে। তবে একই রকম সিদ্ধান্ত নিয়ে ২০১৬ সালে পিছনে সরে আসতে বাধ্য হয়েছিল কেনিয়া। তবে আমি মনে করি দেশের সার্বিক উন্নয়নে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি কোন বিকল্প নেই।’ ব্যাংকিং খাতকে আরো শক্তিশালী করতে নীতি-নৈতিকতা, সততা, সত্যতা, পারস্পারিক সম্মান, জবাবদিহিতা এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ গুরুত্বারোপ করেন এই জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, আমানতকারীদের আমানতের সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, ব্যাংকিং খাতের উন্নয়নে প্রযুক্তি খাতে দক্ষতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু এখনো আমাদের দেশে পর্যাপ্ত দক্ষ কর্মী গড়ে ওঠেনি। তবে পর্যাপ্ত লোকবল তৈরির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান।
মুষ্টিমেয় জনগোষ্ঠীর জন্য অর্থনীতি নয়: আতিউর রহমান
আগের পোস্ট