নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল হরেন্দ্রলাল উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মু. আলাউদ্দিন আর নেই। তিনি গত শুক্রবার রাতে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না.. রাজেউন)। তার মৃত্যুতে অনেকেই গভীরভাবে শোক প্রকাশ করেছেন। ভাগ্যকুল হরেন্দ্রলাল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কাজী আ. রশিদ (এম.এ) দশম প্রধান শিক্ষক হিসাবে অবসরে গেলে তার যোগ্য উত্তরসূরি হিসাবে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেন মু. আলাউদ্দিন বি.এ। তার দীর্ঘসময় প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনের মাঝখানে আরেকজন কিছুকাল প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। মু. আলাউদ্দিন ১৯৯৮ সালে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব থেকে অবসরে যান। সাম্প্রতিককালে তিনি তার পৈতৃক বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার, ঘাটাইল উপজেলার বীরখাগিয়া গ্রামে (ডাকঘর: চাঁনতারা) বসবাস করছিলেন। এটিই তার জন্মস্থান। তার পিতার নাম মু. করমউদ্দিন মৌলবি। ছাত্রজীবনে তিনি খুবই মেধাবী ছিলেন। উচ্চ মাধ্যমিকে মাদ্রাসা বোর্ড থেকে তিনি স্ট্যান্ড করেছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৭ কন্যা এবং ১ পুত্র (আল মামুন আহমদ) এবং নাতি-নাতনি রেখে গেছেন। তিনি বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। ভাগ্যকুল হরেন্দ্রলাল উচ্চ বিদ্যালয়ের সর্বযোগের সবচেয়ে জাঁদরেল প্রধান শিক্ষক ছিলেন তিনি। তার আমলে বিদ্যালয়টি ফলাফলের দিকেও জেলার সেরা স্কুলের একটি ছিল। বর্তমানে এ উপজেলার সবচেয়ে খারাপ রেজাল্টধারী স্কুলের একটিতে পরিণত হয়েছে এ স্কুলটি। তিনি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বের পাশাপাশি ৯ম ও ১০ম শ্রেণিতে ইংরেজি পড়াতেন। তিনি ইংরেজির শুদ্ধ উচ্চারণে পারদর্শী ছিলেন। সহজ ভাষায় ইংরেজি প্রশ্ন, চিঠি ও রচনা লিখে দিতেন যাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের খুব কাজে লাগে। এতে তার স্কুলের শিক্ষার্থীরা ইংরেজিতে ভাল করতো। বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা রক্ষায় তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। বিদ্যালয়ের শিক্ষার উন্নয়নের জন্য তিনি ছিলেন আপোষহীন। ব্যক্তিজীবনে তিনি ভাগ্যকুলের সন্দেশ খেতে পছন্দ করতেন। যখন বৈধ ছিল তখন পর্যন্ত নিজের বন্দুক দিয়ে পাখি শিকার করতে পছন্দ করতেন। যৌবনে ফুটবল, ভলিবল ও ব্যাটমিন্টন খেলতেন। তবে শেষ দিকে তিনি নিজের পরিবারকেই বেশি সময় দিতেন। তিনি ছিলেন প্রকৃতিপ্রেমিক। ছিলেন খুবই ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন। আদর্শ শিক্ষক হিসেবে মাথা সমুন্নত রাখতেন। তার শিক্ষার্থীরা তাকে একজন ভাল ইংরেজির শিক্ষক ও জাঁদরেল প্রধান শিক্ষক হিসাবেই মনে রাখবে চিরকাল।