নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে এক সন্তানের জননীকে তালাক দিয়েছে এক পাষন্ড স্বামী। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার নওপাড়া গ্রামের তাহমিনা আক্তারের বিয়ে হয় শ্রীনগর উপজেলার ফোইনপুর গ্রামের মহিউদ্দিন সিকদারের ছেলে নুরুজ্জামান মানিকের সাথে দীর্ঘ ৬ বছর আগে। বিয়ের পরপর শুরু হয় যৌতুকের জন্য নানা ধরনের অত্যাচার। স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়িসহ ঘরে থাকা তালাকপ্রাপ্ত মানিকের ছোট বোনও নিয়মিত অত্যাচার করছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারটির। নানারকম কৌশলে স্বামীর কাছে তাহমিনার নামে অপবাদ দিয়ে শ্বশুর শাশুড়ি অভিযোগ করলে মানিক ক্ষিপ্ত হয়ে তাহমিনাকে নানারকমভাবে কষ্ট আর খারাপ আচরণ করতো। অভিযোগ আর আত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকলে গত ৩ বছর আগে বাবার বাড়ীতে চলে যায় তাহমিনা। তখন শ্বশুর শাশুড়ি তাহমিনাকে ফিরিয়ে নিতে আসলে তাহমিনা তাদের সাথে যাবেনা বলে তার বাবাকে জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পাষন্ড নেশাগ্রস্থ স্বামী মানিক বাবা, বড় দুলাভাইয়ের বুদ্ধিতে গত ১৯-০১-২০২০ইং তারিখে নোটিশের মাধ্যমে তালাকনামা পাঠায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নুরুজ্জামানের নিকট আত্মীয়ের পরিবার জানান, মানিকের এক তালাকপ্রাপ্ত বোন বাসায় থাকে, ভাইয়ের বউকে সহ্য করতে পারতো না। আগে থেকেই তাহমিনা ও তালাকপ্রাপ্ত মানিকের বোন ছিল বান্ধবী। তারা তাহমিনার বাবার অর্থ দেখে কৌশলে বিয়ে করান ভাইকে। আর এখন মেয়েটাকে বাড়ী ছাড়া করতে উঠে পড়ে লেগেছে। নুরুজ্জামান মানিক ভাল কোম্পানিতে চাকরি করাকালীন সময়ে অফিস কক্ষে নানা ধরনের নেশা করতো এবং করোনাকালীন সময়ে অফিসের নির্দেশ ছিল কোন কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হলে অফিস থেকে আলাদা সুযোগ সুবিধা দিবে। সেই সুযোগে নুরুজ্জামান মানিক ১৫ দিন অফিসে অনুপস্থিত থেকে করোনায় আক্রান্ত বলে পজিটিভ রিপোর্ট নিয়ে অফিসে জমা দেয়। যাচাই বাছাই করে রিপোর্টের নিচে দেওয়া নাম্বারে যোগাযোগ করলে তারা জানান, এখানে করোনা টেষ্ট হয়না রিপোর্ট কিভাবে দিবো। জালজালিয়াতির বিষয়টি জানলে অফিস তাকে বরখাস্ত করে চাকরীচ্যুত করে বের করে দেয়। এ বিষয়ে নুরুজ্জামান মানিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত বলে লাইন কেটে দেয়। তার বাবা মহিউদ্দিন সিকদারের কাছে জানতে চাওয়া হলে সে বলে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার বড় দুলাভাইয়ের কাছে একই প্রশ্ন করলে দাম্ভিকতার সাথে তিনি জানান, তাহমিনা সংসার করলো কবে যে তালাক দিলো। ৫ বছরের মানিকের পুত্রের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে কলটি কেটে দেয়। উল্লেখ্য যে, তাহমিনা আক্তার গত ২০-০২-২০২০ইং তারিখে মুন্সীগঞ্জ কোর্টে উপস্থিত হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে সিআর মামলা করেন যাহার মামরা নং ৪৪/২০ এবং ০৫-০৮-২০২০ইং তারিখে নুরুজ্জামান মানিক আপোষ মীমাংসার কথা বলে জামিনে আসে। পরে ২৭ তারিখে দুইপক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত থেকে স্টাম্পের মাধ্যমে আপোষ করার কথা হয়।