নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের রামপাল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ও পুলিশ ফাঁড়ির ৩০ গজের মধ্যে দুই শিশু, এক কিশোরসহ দুই নারীকে পেটানোর ঘটনায় মামলা করেও প্রতিকার পাচ্ছেনা বিধবার পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৪ জুন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রামপাল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় প্রাঙ্গণে যা হাতিমারা পুলিশ ফাঁড়ির ৩০ গজের মধ্যে অবস্থিত। এ ঘটনায় নুরজাহান বেগম (৩৫), তার বড় ছেলে ফাহাদ (১৫), ছোট ছেলে নাহিয়ান (১০), ছোট বোন পান্না বেগম (৩২), ভাগিনা কাউসার (১০), খালাতো বোন রুবিনা বেগম (২৬) সহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। একইদিন দুপুরে প্রথম দফা মারধরের শিকার হয় পরিবারটি। পরে সেদিনই মুন্সীগঞ্জের সদর থানায় সাড়ে ৩টার দিকে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে বাড়ী ফিরার সময় দ্বিতীয় দফা মারধরের কবলে পড়ে তারা। সেই মারধরের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের ৬ দিন পরে গত ২০ জুন রাতে মামলা নথিভুক্ত করে পুলিশ। মারধরের ৭ দিন পার হলেও আসামীরা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফলে প্রতিনিয়ত আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে বিধবা নুরজাহানের পরিবারকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রামপাল ইউনিয়ন পরিষদ ও হাতিমারা পুলিশ ফাঁড়ি ঘেষা পুরুষশূন্য মৃত রুহুল আমিন এর বসতবাড়ী ও কৃষি জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে জাহাঙ্গীর দালাল নামের এক ভূমিদস্যু। সেই বাড়ী ও কৃষি জমি দখলের চেষ্টায় নানানভাবে হয়রানি করে আসছে মৃত রুহুল আমিনের স্ত্রী নুরজাহান বেগমকে। এর আগেও বেশ কয়েকবার নুরজাহানকে বাড়ী ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে জাহাঙ্গীর। বাড়ী না ছাড়ায় গত ১৪ জুন ইউপি কার্যালয়ের সামনে তাদের দুই দফা লাঠি দিয়ে এলোপাথারি পিটিয়ে নীলাফুলা জখম করে ভূমিদস্যু চক্রটি। মারধরের ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানা পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগী পরিবার। মারধরের শিকার নুরজাহান বলেন, আমার স্বামী মারা যাওয়ার পরে আমার দুই সন্তান নিয়ে বাড়ীতে বসবাস করছি। স্বামী নেই এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিলো জাহাঙ্গীর ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। তার অত্যাচারের ভয়ে ছোট বোন পান্না বেগম ও তার স্বামীকে আমার এখানে এনে রেখেছি। এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে জাহাঙ্গীর। গত ১৪ জুন দুপুরে আমাকে ও আমার সন্তানকে মারধর করে। পরে থানায় অভিযোগ দিয়ে বাড়ীতে ঢোকার সময় দ্বিতীয় দফা আমাদের পরিবারের সবাইকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। মারধরকালে আমাদের আত্মচিৎকার শুনেও হাতিমারা পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে আসেনি। তারা দূর থেকে তাকিয়ে দেখেছে। এরপরে আমরা বারবার থানা পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন প্রতিকার পাইনি। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কথা কটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে নুরজাহান আমার গালে চড় মারলে দুইপক্ষের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তবে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে নীলাফুলা জখমের বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবী করেন জাহাঙ্গীর। এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আনিচুর রহমান বলেন, মারধরের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। তবে দ্বিতীয় দফা মারধরের বিষয়টি আমার জানা নেই। আর কেউ অভিযোগ করতেও আসেনি। আসলে অবশ্যই অভিযোগ নেয়া হবে।