নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ জেলার সদর উপজেলাসহ পাঁচটি উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও অলি-গলিতে সরকারী তথ্যমতে ফার্মেসি রয়েছে প্রায় ১৫০০। এর মধ্যে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে নেয়া ড্রাগ লাইসেন্স রয়েছে ১ হাজার ৪০০টির। বিপুল পরিমাণ ফার্মেসি এখনো ঔষধ প্রশাসনের নজরদারির বাইরে রয়েছে। এসব ফার্মেসির বিরুদ্ধে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর রোগের ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে সাধারণ মানুষের।এদিকে ফার্মেসি চালু করার জন্য সনদপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট থাকা বাধ্যতামূলক হলেও তা মানা হচ্ছে না। অল্প শিক্ষিত ও ওষুধ সম্পর্কে সীমিত ধারণাসম্পন্ন লোকবল দিয়েই চলছে এসব ফার্মেসির ব্যবসা। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর মুন্সীগঞ্জ ও বংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি মুন্সীগঞ্জ শাখা সূত্রে জানা গেছে, জেলার ছয়টি উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার, পাড়া-মহল্লায় ১৫০০টির অধিক ফার্মেসি রয়েছে। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত ড্রাগ লাইসেন্স নিয়েছে মাত্র ১৪০০ ফার্মেসি। এজন্য অনেক সময় চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র না বুঝে ভুল ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে রোগীদের। এ বিষয়ে দৈনিক মুন্সীগঞ্জের কাগজকে ঔষধ প্রশাসন মুন্সীগঞ্জের সহকারী পরিচালক মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা যারা লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসী পরিচালনা করছে তাদেরকে লাইসেন্স করার জন্য তাগিদ দিচ্ছি। তবে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি মামলা ও জরিমানা হয়েছে। বর্তমানে মুন্সীগঞ্জে ৭১টি লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসি রয়েছে যারা ইতিমধ্যে তাদের লাইসেন্স নবায়নের বা লাইসেন্স করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি মুন্সীগঞ্জ শাখার সভাপতি নারায়ণ দাস বলেন, আমরা সচেতনতার মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দিচ্ছি যেন লাইসেন্স ছাড়া কেউ ঔষধ বিক্রি না করে আর যাদের লাইসেন্স আছে তারা নবায়ন করবে। মুন্সীগঞ্জ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সমিতির সভাপতি আক্কাস মিয়া বলেন, লাইসেন্স ও ফার্মাসিস্টবিহীন যারা ফার্মেসি পরিচালনা করে তাদের কারণে একজন সাধারন মানুষ বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন। তাই ওষুধ প্রশাসনের এদিকে নজর দেয়া উচিত। সরকারী তথ্য বলছে, অননুমোদিত এসব ফার্মেসির সংখ্যা মাত্র ৭১টি। তবে মাঠ পর্যায়ের পর্যবেক্ষণ বলছে ভিন্ন কথা, গ্রাম-গঞ্জ ও বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় গড়ে উঠেছে নানা নামে নানান ফার্মেসি। এসব ফার্মেসির মূল গ্রাহক নিম্ন আয়ের লোক। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর ওষুধ সরবরাহের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্টরাসহ লাইসেন্সধারী ফার্মাসিস্টরা।