নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার নদীর তীরবর্তী নদীরক্ষা বাঁধ উদ্বোধন হয় গত ১৮ মে। কাজের মেয়াদ তিন মাস হলেও কাজের নেই গতি। কাজ খুবই ধীরে গতিতে চলছে। লৌহজংয়ের খড়িয়া, তেউটিয়া, লৌহজং, গাঁওদিয়া, হাড়িদিয়া, শ্বশুরবাড়ি থেকে বেজগাঁও বাঘের বাড়ি পর্যন্ত এই এলাকার কাজ। নদী রক্ষা সংরক্ষণ বাঁধের কাজের অংশ হিসেবে নদীতে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। চলমান কাজের নদীতে জিও ব্যাগ ফেলা নিয়ে ঠিকাদারের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে স্থানীয়দের নানা অভিযোগ রয়েছে। আরো তথ্য পাওয়া যায়, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিকেরা খাদ্য ও মজুরির অভাবে পালিয়ে যায়। গতকাল সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাঁওদিয়া ইউনিয়ন ও বেজগাঁও ইউনিয়ন নদীর তীরবর্তী মজুদকৃত জিও ব্যাগগুলোর মুখ খোলা, ব্যাগের গায়ে শেওলা পড়েছে, বালির ব্যাগে ঘাসের চারা হয়ে বড় হয়ে গেছে।
স্থানীয়দের অনেকের দাবী, দীর্ঘদিন রাখায় এ অবস্থা। তাদের দাবী, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কাজ সঠিকভাবে করছে না। উদ্বোধন কাজের মেয়াদ তিনমাস।
নদীর তীরবর্তী স্থানীয় বাসিন্দা সাইদ হোসেন সোহাগ, মো. ছালাম মাদবর, কামাল শেখ, কাঞ্চন শেখ, মরিয়ম বেগম, আমেনা খাতুন, আছিয়া বেগমসহ আরো অনেকেই বলেন, সরকার আমাদের নদীরক্ষা বাঁধ তৈরি করছেন। কিন্তু যারা কাজ করছে মনে হচ্ছে কাজ নয় খেলা করছে। কাজের মান খুবই খারাপ। মাঝেমধ্যে জিও ফেলে, আবার তাদের দেখা যায় না।
তারা আরো জানান, কাজের সঠিক কোন ব্যক্তি দেখভাল করছে না। এছাড়া আমরা দেখি নদীর পাড়ে বালি ভর্তি জিও ব্যাগগুলো ছেঁড়া। পরেরদিন দেখি নাই, বালি পড়ে আছে। এছাড়া বালি ব্যাগের উপর ঘাসের চারা, বিভিন্ন লতা গাছ বড় হয়ে গেছে।
শ্বশুরবাড়ির এলাকার ওয়েস্টান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, ১৮টি পয়েন্টের মধ্যে আমাদের কাজ ৭, ৮, ১১- এ তিনটিতে। আমরা কাজ করছি। আমাদের পার্শ্ববর্তী আব্দুল্লাহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে তাদের কোন শ্রমিককে পাওয়া যায়নি।
এ সকল বিষয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অফিসে ডেকে কাজ ত্বরান্বিত করার জন্য বলেছি। এছাড়া আমি ইতিমধ্যে ঠিকাদারকে অতি দ্রুত কাজের নিদের্শ দিয়েছি। তারা আমাকে কাজের গতি বাড়াবে বলে আশ্বস্ত করেছেন। এরপর অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে ১০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অফিসিয়াল চিঠি দেব।
উল্লেখ্য, লৌহজং উপজেলার খড়িয়া থেকে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দিঘীরপাড় পর্যন্ত পদ্মার ভাঙনরোধে ৪৪৬ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা হবে। ১০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ করবে।