নিজস্ব প্রতিবেদক : লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে উপজেলার কুমারভোগ ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের বসতভিটা। বেশ কয়েক বছর যাবত কুমারভোগ ইউনিয়নের বিস্তীর্ন অঞ্চল সর্বনাশা পদ্মার গর্ভে বিলীন হচ্ছে। এবছর খড়িয়া গ্রামের কয়েক শতাংশ করে ফসলি জমি ও বসতভিটা প্রতিদিন পদ্মার গর্ভে হারিয়ে গেলেও দেখার কেও নেই। ৫ বছর যাবত ঘনবসতিপূর্ণ এ গ্রামটি নিয়মিত ভেঙে যাওয়ার পরও গ্রাম রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভাঙন কবলিতরা। কয়েক বছর ধেের এ এলাকায় ভাঙন শুরু হলেও কার্যকর তেমন কোনো ব্যবস্থাই গ্রহন করা হয়নি। তাই এলাকাবাসী ভাঙনরোধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানায়। খড়িয়া গ্রামের ভাঙনকবলিত বাদল শেখ বলেন,গতবছর আমার বসতভিটা হারিয়ে অন্যের জমিতে এসে বাড়ি-ঘর তুলি এবছর আবারো সেই আশ্রয়স্থল টুকো হারালাম এখন আমার পরিবার পরিজন নিয়ে অন্যত্র যাওয়ার সমর্থ্য টুকু নেই। একই গ্রামের বাসিন্দা রফিক মোল্লা বলেন, ত্রান চাইনা। চাইনা আর্থিক কোন সহযোগিতা। সরকারের কাছে একটাই দাবি-নদী শাসন করে পৈতৃক ভিটা রক্ষা করা হোক। আমাদের পৈতৃক ভিটেমাটি ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে এর থেকে কষ্ট,দুঃখ আর কি হতে পারে। মো. আফজাল শেখ বলেন রাতে ঘুম আসেনা সারাক্ষন আতঙ্কের মধ্যে দিয়েই থাকি কখোন যে ছাড়তে হয় আমার পৈতৃক ভিটেখানি। একই গ্রামের মো. রাসেল শেখ বলেন গত বছর ভিটেমাটি হারা হয়ে এক আতœীয়ের জমিতে এসে ঠাঁই জমাই, আবারও এবছরে আমাদের বাড়ি-ঘর হারা হতে হলো। কুমারভোগ ইউপির খড়িয়া গ্রামের ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. জাকির হোসেন বলেন,কয়েক বছর ধরেই এলাকাটি নদী ভাঙনের কবলে রয়েছে।গত তিনদিনে ১৫০ হাত এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। খড়স্রোতা পদ্মা এখন খড়িয়া গ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এবছরে নদীর তীব্র ভাঙনে আমি ভিটেমাটি হারিয়ে এখন আমাকে অন্যত্র চলে যেতে হচ্ছে। খড়িয়া ১,২,৩নং ওয়ার্ড এ বিস্তীর্ন ঘনবসতি গ্রামটিতে এখনো তিন শতাধিকেরও অধিক পরিবার নদী ভাঙনের হুমকির মুখে থাকায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে এবং গ্রামের দু-টি মসজিদও নদী ভাঙনের কবলে রয়েছে। একই গ্রামের বাসিন্দা মো. রফিজ উদ্দিন জানান,মাসের পর মাস নদীতীরে ভারী জাহাজ ও ট্রলার নোঙওে রাখায় ভাঙনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি নদীতীরে জাহাজ নোঙর করিয়ে বিনিময়ে টাকা হাতিয়ে নিলেও ক্ষয় ক্ষতির বিষয়টি কোনো তোয়াক্কা করছেনা লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মো. কাবিরুল ইসলাম খান বলেন,পদ্মার ভাঙনের বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্টদের খড়িয়া সংলগ্ন এলাকাটি পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদী শাসনের আওতায় রয়েছে। আগামী অর্থবছর ভাঙনরোধে কাজ করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।