নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় প্রথম বঙ্গবন্ধু কর্ণার স্থাপন করেছে দিঘলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কাজী রুনা ব্যক্তিগতভাবে নিজস্ব অর্থায়নে বঙ্গবন্ধু কর্ণার স্থাপনের উদ্যোগ নেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু কর্ণারের দেয়ালে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক ও দুর্লভ ছবি, পোস্টার ও ব্যানার। বিশেষ করে ১৯৭১ সালে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের লিখিত রূপ দেয়া হয়েছে বিশাল ব্যানারে। এছাড়া ছোট্ট একটি লাইব্রেরিতে রয়েছে বঙ্গবন্ধু রচিত বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচাসহ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক শিশুতোষ বইপত্র। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু কর্ণারে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে লৌহজং উপজেলার ১০ জনসহ জেলার ৩২ জন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা। যা স্থানীয়ভাবে কারও কাছে সংরক্ষিত নেই। কক্ষটিতে একসঙ্গে ১৫-২০ জন বসে পড়াশোনা করতে পারে। চলতি বছরের ২ মার্চ বঙ্গবন্ধু কর্ণার উদ্বোধন করা হয়। বঙ্গবন্ধু কর্ণার স্থাপনের সুফলও পাচ্ছে বিদ্যালয়টি। বিগত টানা তিনবছর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে জানো’ প্রতিযোগিতায় জেলা পর্যায়ে প্রথম হয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধু কর্ণার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণকারী সহকারী শিক্ষক কাজী রুনা জানান, ২০১৭ সালে আমার মেয়ে জেলা পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে জানো বিষয়ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। কিন্তু তখন বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক কিছু অজানা থাকায় প্রতিযোগিতায় ভালো করতে পারেনি। এছাড়া বিভিন্ন বইপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে একেক রকম তথ্য থাকায় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তথ্য সংগ্রহ করার উদ্যোগ নিই। আর এর ফলশ্রুতিতে এ বঙ্গবন্ধু কর্ণার। বিদ্যালয়ের আলাদা একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধু কর্ণার স্থাপনের অনুমতি দিয়ে প্রধান শিক্ষক নার্গিস আক্তার বিশেষ অবদান রেখেছেন। তাছাড়া সহকর্মী শিক্ষকেরাও নানাভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছেন। এদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন কাজী রুনা। তিনি আরও জানান, চলতি বছরের মার্চে এটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলেও ২০১৮ সাল থেকে এর কাজ শুরু করা হয়। কাজী রুনা বলেন, সহকারী শিক্ষক মনিকা আক্তারকে নিয়ে বিদ্যালয়ের কিছু সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে উপজেলার বেশ কয়েকজন জীবিত মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনার ব্যবস্থা করেছেন। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে পুনরায় শিক্ষার্থীদের মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের গল্প ও ইতিহাস শোনার ব্যবস্থা করবেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। দিঘলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লৌহজংয়ে প্রথম বঙ্গবন্ধু কর্ণার স্থাপন প্রসঙ্গে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মহিউদ্দিন বাবুল মুন্সী তাদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত কর্ণার আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল। আমরাও তাদের মতো উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনের একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধু কর্ণার স্থাপন করবো।