নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার নওপাড়া বাজারে অবস্থিত নওপাড়া ডিজিটাল হাসপাতাল এন্ড ডি ল্যাব ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক দুই জমজ শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোগী আয়শা বেগমের স্বামী মো. দেলোয়ার হোসেন অভিযোগে জানায়, উপজেলার বেজগাওঁ ইউনিয়নের মালিরঅংক গ্রামের মো. দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী আয়শা বেগম ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গত রোববার সন্ধ্যায় পেটে সাময়িক ব্যথা নিয়ে নওপাড়া বাজার ডিজিটাল হাসপাতালে যায়। সেখানে তাকে ভর্তি করা হলে রোগী এবং তার আত্মীয়স্বজনরা জানান, অন্তঃসত্ত্বা আয়শা বেগম লৌহজং সদর হাসপাতালে গাইনী ডাক্তার তাহমিনার তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। তার অনুমতি ছাড়া তারা কোন চিকিৎসা করাবেন না। এসব কথা শোনার পর নওপাড়া ডিজিটাল হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ রোগী ও তার সাথে থাকা আত্মীয়স্বজনদের আশ^াস দেন তারা ডাঃ তাহমিনার সাথে কথা বলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। অথচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডাঃ তাহমিনার সাথে কোনরকম যোগাযোগ না করে তারা নিজেরাই রোগী দেখে ভুল চিকিৎসা দেন এবং কিছু ঔষধ ও স্যালাইন আনতে রোগীর লোকজনের কাছে একটি স্লিপ ধরিয়ে দিয়ে বলেন, ডাঃ তাহমিনা আপা এসব চিকিৎসা দিয়েছেন। ঔষধগুলো আপনারা নিয়ে আসেন। অপরদিকে রোগীকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো হয় সেখানে দেখা যায়, বাচ্চার হার্টবিট ভাল এবং বাচ্চা সুস্থ রয়েছে। এরপর রোগীর শরীরে একটি স্যালাইন পুশ করা হলে তার ব্যথা বেড়ে যায় এবং রাত সাড়ে ৮টায় দুটি জমজ কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। দুই ঘন্টা জীবিত থাকার পর রাত ১০টায় জমজ দুই নবজাতকের মৃত্যু হয়। অপুষ্টি ও অপরিপক্ক হওয়ায় এবং সময়ের আগে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানো জমজ নবজাতকের মৃত্যুর কারণ বলে জানা যায়। এদিকে হাসপাতালের সিটে মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে আয়শা বেগম। গতকাল সোমবার সকালে জমজ নবজাতক দু’জনকে বেজগাঁও কবরস্থানে দাফন করেছেন তার আত্মীয়স্বজনরা। রোগীর আত্মীয়স্বজন ও স্বামী মো. দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, রোগীকে কোনরকম চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১৩ হাজার পাঁচশত টাকা বিল করেছে। এই টাকা পরিশোধ না করায় রোগী আটকে রাখা হয়েছে। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো বাবদ ১৫০০ টাকা এবং ঔষধ ও স্যালাইন নিজেরা কিনে এনেছি ডেলিভারি নরমাল হয়েছে তারপরও ১৩ হাজার ৫০০ টাকা বিল করেছে তারা। এতো টাকা বিল দিতে অপারগতা স্বীকার করলে এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত গত রোববার রাত থেকে গতকাল সোমবার সারাদিন রোগীকে টাকার জন্য আটকে রাখার অভিযোগ করেছে রোগী আয়শা বেগমের স্বামী দেলোয়ার হোসেন। এই বিষয়ে নওপাড়া ডিজিটাল হাসপাতাল এন্ড ডি ল্যাবের পরিচালক আব্দুল মান্নান জানান, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি হাসপাতালের রোগীর সাথে। রোগী এবং তার আত্মীয়স্বজনের ইচ্ছেতেই সবকিছু হয়েছে। টাকার জন্য রোগী আটকে রাখার কথা বলা হলে সে জানায়, চিকিৎসা করালে তার বিল দিতে হবে এটাই স্বাভাবিক। এদিকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসাইন জানান, এমন একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। ঘটনাস্থলে অফিসার পাঠিয়েছি। অভিযোগ সত্য হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।