দেড় মণ ধান বিক্রির টাকায় মিলছে একজন শ্রমিক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শ্রমিক সঙ্কটের কারণে জমিতেই ঝরে পড়ছে কৃষকের ঘাম ঝড়ানো স্বপ্নের ধান। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম জানান, এবার লৌহজং উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ইরি ধানের আবাদ করা হয়। এ বছর ঝড়-বৃষ্টি না হওয়ায় ইরি ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু শ্রমিক সঙ্কটের কারণে জমিতেই ঝরে পড়ছে পাকা ধান। খিদিরপাড়া গ্রামের কৃষক মো. সোহেল শেখ জানান, এলাকায় শ্রমিক সঙ্কটের কারণে পাকা ধান জমিতেই ঝরে পড়ছে। কিছুই করার নেই। আমি সাড়ে ৯ গন্ডা জমিতে ধান লাগিয়েছি। জমির কিছু অংশে ঢলের ও বৃষ্টির পানি জমেছে। শ্রমিকের সঙ্কটের কারণে আমি নিজেই ৪ গন্ডা জমির ধান কেটেছি। বাকি ধান জমিতে ঝরে পড়ছে। বৃষ্টি আর বাতাসে জমিতে ধান পড়ে যাওয়ায় আরও বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছি। গতকাল মঙ্গলবার শ্রমিক আনার জন্য বিভিন্ন এলাকায় গিয়েছি। কোথাও কোন শ্রমিক নেই। দুইজন শ্রমিক পেয়েছি তাদের রোজ ১৪শ’ টাকা করে এবং দু’বেলা খাবারসহ একজন শ্রমিকের পিছনে খরচ হয় প্রায় ১৮শ’ টাকার মত। আর বর্তমানে বাজারে নতুন ধানের মণ প্রতি মূল্য রয়েছে ৯শ’ টাকা। তাই দেড় মণ ধান বিক্রি করে একজন শ্রমিককে পারিশ্রমিক দিয়ে বিদায় দিতে হয়।
উপজেলার গোয়ালী মান্দ্রা এলাকার কৃষক মোঃ সুরুজ্জামান জানান, শ্রমিকের অভাবে তার ধান জমিতে পড়ে ধানের গ্যারা জালিয়েছে। শ্রমিক সঙ্কটের কারণে হলদিয়ার কারপাশা গ্রামে কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছে আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের কর্মীরা।
এদিকে কৃষি কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, সহজ উপায় ও অল্প খরচে কৃষকের ধান কাটার জন্য একটি অত্যাধুনিক মেশিন বের করা হয়েছে। কম্বাইন্ড হারভেস্টার নামের এই মেশিনটি অল্প সময়ে কম খরচে খুব দ্রুত ধান কাটতে সক্ষম। এক গন্ডা জমির ধান ৬০০ টাকায় কেটে দেয় এই যন্ত্রটি। কিন্তু সমস্যাও রয়েছে। সব এলাকায় বিলে ও জমিতে রাস্তা না থাকায় এই মেশিনটি খুব একটা কাজে আসছেনা কৃষকের।