লৌহজংয়ে নদী ভাঙ্গন এলাকা পরির্দশন করে বন্যা দুর্গতদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী দিলেন সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি এমপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
বন্যার পানিতে লৌহজংবাসী এখন ভাসছে। উজান থেকে ধেয়ে আসা বানের পানিতে তলিয়ে দিচ্ছে লৌহজংবাসীকে। দিন দিন লৌহজংয়ের বন্যার পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের ৪৬টি গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। এতে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। শুধুমাত্র বৌলতলী ইউনিয়নের বাসিন্দা বন্যায় প্লাবিত হননি। তালিকাভুক্ত ১২ হাজার ৪০০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পদ্মার ছোবলে লৌহজংয়ের মানচিত্রের পরিবর্তন হচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। ভেঙ্গে যাচ্ছে পদ্মা পাড়ের ভিটেবাড়ি ও ফসলি জমি। রাতের আঁধারে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতে হচ্ছে শত শত পরিবারকে। এদিকে পদ্মার পানি বিপদসীমার ৭২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে অতিক্রম করায় তলিয়ে গেছে পুরো পদ্মার চরটি। সে সাথে লৌহজংয়ের অর্ধেকের বেশি জমি এখন পানিতে তলানো। জনসাধারণ পড়েছে বিপাকে। বাহিরে পানি ঘরেও পানি সে সাথে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ও শাখা রাস্তাগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যাতায়াতের চরম ভোগান্তিতে শিকার হাজারও মানুষ। উপজেলাবাসীর আশ্রয়ের কথা চিন্তা করে অর্ধশতাধিক আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১০৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। ব্রাক্ষ্মণগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ে ৩০টি পরিবার। চর লক্ষ্মীকান্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪০টি পরিবার। সরকারি লৌহজং বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ৪টি পরিবার। ৩নং খড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩টি পরিবার। ওয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০টি পরিবার ও ৩নং পশ্চিম কুমারভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০টি আশ্রয়ে আছেন। এদিকে মুন্সীগঞ্জ-লৌহজং-মাওয়ার প্রধান সড়ক (মালির অংক বাজার) বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে গিয়েছে। যেকোন মুহুর্তে সড়কটি ভেঙ্গে যেতে পারে বলে দাবী এলাকাবাসীর। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক ঢালী, সাব্বির শেখ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মালির অংক বাজারের প্রাণকেন্দ্র লৌহজংয়ের প্রধান সড়ক দিয়ে দেদারছে পানি ছুটা শুরু করে। শুরু থেকেই পানির গতি অনেক ছিলো। পানির স্রোতের কারণে রাস্তার পাড় ভেঙ্গে গিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা যদি তাৎক্ষণিক এ প্রতিরোধের ব্যবস্থা না নেয় তাহলে এ সড়কটি পুরো ভেঙ্গে যাবে। তাই আমাদের একটাই দাবী রাস্তাটি দিয়ে বড় বড় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দুই পাড়ে বালু ভর্তি বস্তা ফেলা হোক। লৌহজং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সাজেদা সরকার জানান, পদ্মার পানি বিপদসীমার ৭২ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে ফেলছে। যার ফলে লৌহজংয়ে দিন দিন পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। লৌহজংয়ে ১২ হাজার ৪০০ পরিবার বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা এ পর্যন্ত ৩৫ মেট্রিক টন চাল ও ৩০০ পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। আবারও অসহায় নদী ভাঙ্গা ও বন্যায় প্লাবিতদের জন্য ২০ মেট্রিক টন চাল ও ৫০০টি পরিবারের জন্য শুকনো খাবার আসছে। খুব শীঘ্রই এ সহায়তা প্রদান করা হবে। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে লৌহজং উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি ও নদী ভাঙ্গন এলাকা পরির্দশন করেন মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি এবং বন্যা দুর্গতদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন এসময় উপস্থিত ছিলেন লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাবিরুল ইসলাম খান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাজেদা সরকার, ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।