নিজস্ব প্রতিবেদক
উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে আধুনিকায়নের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকার সারা দেশের চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধি করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় লৌহজং উপজেলা হাসপাতালে ভালো সেবা পেয়ে মানুষ এখন সন্তোষ প্রকাশ করছে। বদলে গেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার চিত্র।
গতকাল সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা বেশিরভাগ নারী ও শিশু। তবে পুরুষ তুলনামূলক কম। হাসপাতালের ছয়মাস আগের চিত্র থেকে বর্তমান চিত্র অনেক ভালো। এখন মানুষের চাহিদা অনুসারে সেবা হাসপাতালে পাওয়া যায়।
তথ্য থেকে জানা যায়, প্রতিদিন ১৫ জন ডাক্তার নিয়মিত রোগী দেখছেন। সেই হিসেবে নার্স আছেন ২৪ জন। প্রতিদিন প্রায় তিনশত রোগী সরকারি মূল্যে টিকিট ক্রয় করে ডাক্তারের সাথে সাক্ষাৎ করে সমস্যার কথা বলছেন। তারা চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছেন। সেবা গ্রহণকারীদের সরকারিভাবে কিছু ঔষধ দেয়া হচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহণকারী বেজগাঁও ইউনিয়ন ছত্রিশ গ্রামের বাসিন্দা মাহমুদা (২২) বলেন, আমার দুই বছরের সন্তানের বমি, পাতলা পায়খানা খুবই খারাপ অবস্থা ছিলো। রাতে আমি সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে যাই। ডাক্তার ভর্তি হতে বললে রাতেই চিকিৎসা শুরু হয়। পাঁচদিন চিকিৎসা শেষে সন্তানকে ভালো করে বাড়িতে নিয়ে যাই। তাদের চিকিৎসা সেবা পেয়ে আজ আমি সন্তান নিয়ে খুশি। হাসপাতালের ডাক্তার ও কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞ।
হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা নারী সুকতারা (১৮) ঠান্ডা, জ্বর, গলা ব্যথা নিয়ে সেবা গ্রহণ করতে এসেছেন। তিনি ডাক্তারের সাথে সাক্ষাৎ শেষে এ প্রতিবেদককে জানান, বতর্মানে হাসপাতালে ডাক্তার খুবই আন্তরিক। আমার সমস্যার কথা শুনে চিকিৎসা প্রদান করেছে।
শাহিদা বেগম (৩৫) নামে আরো একজন রোগী সেবা গ্রহণ করতে এসে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণকারী কনকসার ইউনিয়নের মশদগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মো. ফারিয়াজ (২০) পেটে ব্যথা, বমি নিয়ে চারদিন আগে ভর্তি হয়ে সুস্থ হয়ে বাড়িতে যাওয়ার কথা। তার মা সাথী বেগম (৪০) বলেন, আমার ছেলেকে নিয়ে চারদিন আগে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছি। তখন তার খুবই বাজে অবস্থা ছিল। এখন তার অবস্থা মোটামুটি ভালো। এই হাসপাতালের ডাক্তার-নার্স খুবই আন্তরিক। বিশেষ করে এখানকার পরিবেশ খুব ভালো। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। ছেলের সুস্থতায় তাদের ভূমিকা ছিলো গুরুত্বপূর্ণ। তবে আনুষঙ্গিক ঔষধ, খরচ বিবেচনা করলে হাতের কাছে হাসপাতাল ও ডাক্তারসহ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষদের জন্য হাসপাতালটির সেবা সত্যিই সেবা ঘর।
এছাড়া ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণকারী মো. সুলতান মোল্লা, মো. হামিম মৃধা, মো. ইসমাইল তারা লৌহজং উপজেলা হাসপাতালের সেবা পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
লৌহজং উপজেলা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার শিহাব ইবেন সিরাজ ও জান্নাত আরা হোসেন জানান, ঋতু পরিবর্তন হয়েছে। তাই চর্মরোগ, গলা ব্যথা, জ্বরের রোগী বেশি আসছে। আমরা সেবা প্রত্যাশীদের সাধ্যমত চিকিৎসা ও সরকারি ঔষধ দিচ্ছি। আমরা প্রতিদিন মানুষের সেবায় সরকারিভাবে যথেষ্ট ঔষধ দিচ্ছি।
লৌহজং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. নাজমুস সালেহীন বলেন, হাসপাতালে মানসম্মত চিকিৎসা দেওয়া হয়। বর্তমানে আল্ট্রাসনোগ্রাফী, সিজার অপারেশন চালু আছে। আমাদের এখানে চিকিৎসকরা অত্যন্ত আন্তরিক হয়ে সেবা প্রত্যাশীদের ভালো সেবা প্রদান করছে। আমাদের কিছু আর্থিক অসুবিধা আছে। যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ নেই। তবে সেবা দিয়ে মানুষকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছি।