নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার আওতাধীন শিমুলিয়ার মাওয়া ঘাট থেকে গত ১৯ মে বৃহস্পতিবার আনুমানিক বিকাল ৬টায় মাওয়া শিমুলিয়া ৩নং ফেরি ঘাটের পল্টুনের ডিউটিতে থাকা সেনা সদস্যদের সহযোগিতার ভূয়া সেনাবাহিনী পরিচয় দানকারীকে লৌহজং থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেন। লৌহজং থানা পুলিশের তথ্য অনুসারে জানা যায়, ভূয়া সেনাবাহিনীর পরিচয় দানকারী মো. কবির হোসেন (৩২) পিতা- শাজাহান বিশ্বাস, মাতা কোহিনুর বেগম, সাং- ছোট ঘিঘাটি, থানা- কালীগঞ্জ, জেলা- ঝিনাইদহ তিনি সেনাবাহিনীর পোশাক, বুট, ভূয়া আইডি কার্ড, ভূয়া নিয়োগপত্র দেখিয়ে বরিশালের টরকীবাজার থেকে প্রাইভেটকারে রাজিব হাওলাদার (২৫) চার লক্ষ টাকার বিনিময়ে, মিজানুর রহমান (২৪) পাঁচ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার বিনিময়ে, সেনাবাহিনীতে মালি পদে চাকরিতে যোগদানের কাগজপত্র দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসার পথে শিমুলিয়া মাওয়া ঘাটে ফেরিতে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা তার পরিহিত সেনাবাহিনীর পোশাক, পোশাকের সাথে সাদৃশ্য র্যাংক ব্যাজ দেখে সন্দেহ হয়। কথাবার্তা বলে ছবি তুলে দোগাছি বিবিএ সার্ভিস এরিয়া ০১ শেখ রাসেল সেনানিবাস মাওয়া ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়া হয়। যাচাই বাছাই করে দেখা যায়, তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য নয়। ফেরি ঘাটের পন্টুনে উপরে পৌঁছালে ঘাটে ডিউটিতে থাকা সেনা সদস্যরা গাড়িটি আটক করে। বিভিন্ন কথাবার্তা ও জিজ্ঞাসাবাদের সময় পন্টুন থেকে তিনি পদ্মা পানিতে ঝাঁপ দেয়। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাকে আটক করা হয়। মাওয়া শিমুলিয়া ঘাটে সেনাবাহিনীর ডিউটিরত সদস্যগণ তাকে ক্যাম্পে নিয়ে ভূয়া সেনা সদস্য প্রতীয়মান হওয়ার পর লৌহজং থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
ভুক্তভোগী রাজিব হাওলাদার (২৫) পিতা- দলিল উদ্দিন হাওলাদার এবং মিজানুর রহমান (২৪) পিতা- আলাল উদ্দিন জানান, আমরা পানের বরজের শ্রমিক। মো. কবির হোসেন (৩২) বিভিন্ন সময়ে সেনাবাহিনীর অফিসার হিসেবে নিজেকে পরিচয় দানের মাধ্যমে তার সাথে আমাদের সুসম্পর্ক হয়। তিনি আমাদের মালির পদে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি জানান, এর আগে তিনি অনেককেই চাকরি দিয়েছেন। তবে চাকরি পেতে তিনি চার লক্ষ টাকা এবং আমার নিকটতম বন্ধু আরেকজনের নিকট পাঁচ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবী করেন। সরকারি চাকরি পাওয়া আশায় আমরা তাকে টাকা দেই। তার সাথে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হই। আমাদের যে কাগজপত্র দিয়েছিল তাতে সেনাবাহিনীর সীল ছিল। আমরা গরীব মানুষ। অনেক কষ্টে টাকা সংগ্রহ করেছি চাকরি পাবো আশায়। তিনি প্রতারণা করবে তা আমরা বুঝতে পারি নাই। গতকালের ঘটনার পর থেকে অনেকেই আমাদের সাথে যোগাযোগ করে এবং তার কাছে প্রতারণার শিকার হয়েছে বলে জানান।
লৌহজং থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ-আল তায়াবীর জানান, মো. কবির হোসেন নামে একজন ব্যক্তি ভূয়া সেনাবাহিনীর পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন লোকজনের সাথে প্রতারণা করে ভূয়া নিয়োগপত্র, ভূয়া চাকরিতে যোগদান পত্রসহ সর্বমোট ৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার আত্মসাৎকারী অভিযোগ পাওয়া যায়। গতকাল শনিবার তিনি দুজনকে নিয়ে ঢাকা যাওয়াকালে ভূয়া সেনাবাহিনীর পোশাক পড়ুয়াকে শিমুলিয়া মাওয়া ঘাট থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া তিনি আরো বলেন, আমাদের কাছে ভুক্তভোগী সরল বিশ্বাসে প্রতারণার শিকার প্রাথমিক কিছু প্রমাণ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে এবং গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।