নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলায় সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ। পৌষের হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষার ফুল। শীতের শিশির ভেজা সকালে ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়ানো শ্রীনগরের প্রতিটি মাঠজুড়ে কেবল চোখে পড়ছে সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। এই শীতের শিশির ভেজা সকালে সরিষার সবুজ গাছের ফুলগুলো শীতের সোনাঝরা রোদে যেন ঝিকিমিকি করছে। এ যেন এক অপরূপ সৌন্দর্যের দৃশ্য।
গতকাল শনিবার শ্রীনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গেলে এমনই চিত্র দেখা যায়। চারপাশে শুধু সরিষা ফুলের মৌ-মৌ গন্ধে মুখরিত ফসলের মাঠগুলো। সবুজ শ্যামল প্রকৃতির ষড়ঋতুর এই দেশে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে যেমনি প্রকৃতির রূপ বদলায়, তেমনি বদলায় ফসলের মাঠ। কখনো সবুজ, কখনো সোনালি, কখনো বা হলুদ। এমনি ফসলের মাঠ পরিবর্তনের এ পর্যায়ে হলুদ সরিষা ফুলের চাদরে ঢাকা পড়েছে শ্রীনগর উপজেলার ফসলের মাঠ।
বর্তমানে সরিষা একটি লাভজনক ফসলে পরিণত হওয়ায় ধীরে ধীরে সরিষা আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গাঢ় হলুদ বর্ণের সরিষার ফুলে ফুলে মৌমাছিরা মধু সংগ্রহের জন্য গুনগুন করছে। চলছে মধু আহরণের পালা। মৌমাছিরা মধু সংগ্রহে মাঠে নেমেছে। শীতের শিশির সিক্ত মাঠভরা সরিষা ফুলের গন্ধ বাতাসে ভাসছে। মানুষের মনকে পুলকিত করছে। সরিষার ক্ষেতগুলো দেখে মনে হয়, কে যেন হলুদ চাদর বিছিয়ে রেখেছে। হেমন্তকালের মাঠে মাঠে সবুজের অপার সমারোহ এখন আর নেই। দিগন্ত জুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য শোভা পাচ্ছে। সরিষা ও শীতকালীন সবজি মাঠের শোভা বর্ধন করছে।
এ বছর শ্রীনগর উপজেলায় সরিষার আবাদ বেড়েছে বলে জানান কৃষকদের মধ্যে এক কৃষক মোসাদ্দেক। তিনি জানান, সরিষার চাষ পদ্ধতি খুব সহজ ও কম খরচে অল্প সময়ে খুবই লাভজনক ফসল। কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে দু-একটি চাষ বা বিনা চাষেই জমিতে ছিটিয়ে সরিষা বীজ বপন করা হয়।
কৃষক মোশাররফ জানান, দেশীয় সরিষার জাতগুলোর চেয়ে উন্নত জাতগুলোতে ফলন বেশি হয়। গত বছরের চেয়ে এবার সরিষা আবাদ ভালো হয়েছে। আশা করি, লাভও ভালোই পাওয়া যাবে। আবহাওয়া ভালা থাকলে ফসল ঘরে তুলতে পারবো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর প্রত্যেক চাষি বেশি মুনাফা লাভ করবে। চাষকৃত সরিষার বেশিরভাগই ফুল এসে গেছে। এদিকে চলমান ঘন কুয়াশা বেশিদিন স্থায়ী হলে সরিষার ফলনে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। শীতের স্থায়ীত্ব যদি কমে আসে তাহলে আবাদে কোনো প্রভাব পড়বে না। সরিষা রোপণের মাত্র ৭৫-৮০ দিনের মধ্যে এর ফলন পাওয়া যায়।