নিজস্ব প্রতিবেদক
যানজটে নাকাল মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরবাসী। সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত যেন যানজট লেগেই থাকে এই উপজেলার শ্রীনগর বাজারে। ছোট-বড় গাড়ির যত্রতত্র পার্কিং ও প্রধান সড়ক এবং ব্রীজের দুইপাশে ভ্রাম্যমাণ দোকান, ফুটপাতের দোকান, মোড়ে মোড়ে সিএনজি ও অজস্র অটোরিক্সার অস্থায়ী স্ট্যান্ডের কারণে উপজেলাটিতে যানজটের স্থায়ী রূপ নিয়েছে। এর পরিত্রাণ নিয়ে সুশীল সমাজে উঠেছে নানান প্রশ্ন।
শ্রীনগর উপজেলার প্রবেশদ্বারের সবকয়টি পথে প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা, মিশুক, সিএনজির দাপটে জনজীবন বিপর্যয়ের মুখে। শ্রীনগরে জনসাধারণ অটোরিক্সার কাছে যেন জিম্মি হয়ে আছে। ছোট্ট আরামদায়ক অটোরিক্সাটি এখন মৃত্যুর ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কখনো চাকার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মা-বোনদের মৃত্যু, কখনোবা অটোর সাথে অটোর ধাক্কা খেয়ে মৃত্যুবরণ- এ যেন নিত্যদিনের চিত্র। অদক্ষ চালক ও ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সী কিশোরের হাতে এই মৃত্যুর যানটি। নির্দিষ্ট আইন থাকলেও প্রয়োগের অভাবে এ ধরনের দূর্ঘটনা অহরহ ঘটছে বলে মনে করেন শ্রীনগর উপজেলার নানা পেশার মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শ্রীনগরের এম রহমান মার্কেটের সামনের রোডের দুই লেনই দখলে থাকে সিএনজি ও অটোরিক্সার। শ্রীনগর গার্লস স্কুলের পাশে সর্বক্ষণ অটোরিক্সার মেলা। অটোর জন্য যত্রতত্র পার্কিং ব্যবস্থা থাকলেও সাধারণ মানুষের চলাচলের কোনো রাস্তা নেই। তার থেকে ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়, শ্রীনগর চকবাজার মোড়ে। যাত্রীর থেকে তিনগুণ অটোরিক্সা ইচ্ছেমত পার্কিং করাতে জনসাধারণের বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ কারণে রাস্তার এপার থেকে ওপার পার হওয়া তো কষ্টসাধ্য। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও বয়স্ক লোকদের জন্য শ্রীনগরের মূল প্রবেশপথগুলো পারাপারের জন্য অটোরিক্সা একটা আতঙ্ক নামে পরিচিত। সেকেন্ডের মধ্যে ঘটে যায় বড় ধরনের দূর্ঘটনা।
শ্রীনগরের বাসিন্দা মোঃ শামীম হোসেন বলেন, মোটরসাইকেলযোগে বাসায় আসার সময় পিছন থেকে অটোরিক্সা ধাক্কা দিয়ে আমাকে ফেলে রেখে চলে যায়। মারাত্মক দূর্ঘটনায় আহত হয়ে আজ আমি দশ দিন যাবত শয্যাশায়ী। শুধু তাই নয়, ইমারজেন্সি এ্যাম্বুলেন্সও দ্রুত পার হওয়ার জন্য সময়ের বিড়ম্বনায় পড়ে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হোসেন পাটোয়ারী বলেন, আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। শীঘ্রই এ ব্যাপারে কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
শ্রীনগর পোস্ট অফিস সংলগ্নে শ্রীনগর সার্কেল অফিস অবস্থিত। প্রায় সবসময় দেখা যায় সার্কেল অফিসের প্রবেশপথ অটোরিক্সার দখলে। এ ব্যাপারে শ্রীনগর সার্কেল অফিসার মোঃ তানভীর হাসান বলেন, শ্রীনগর থানা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী শৃঙ্খলার সাথে সার্বক্ষণিক চেষ্টা চালিয়ে আসছে।