নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে করে উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী বাঘড়া, ভাগ্যকুল ও রাঢ়ীখাল ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বাঘড়া ইউনিয়নের প্রায় রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ির উঠানে এখন হাঁটু ও কোমর পানি। অপরদিকে ভাগ্যকুল ইউনিয়নের পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষা ভাগ্যকুল বাজারসহ আশপাশের রাস্তা ও বাড়িঘরে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এছাড়াও রাঢ়ীখাল ইউনিয়নের কবুতর খোলাসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এখন পানিবন্দী। বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ এখন পানিবন্দী। করোনা মোকাবেলার পাশাপাশি এলাকাগুলোতে হঠাৎ বন্যায় মানুষের দুর্ভোগ আরো বেড়ে গেছে। বন্যায় ঘরবন্দি মানুষগুলো এখন প্রায় দিশেহারা। লক্ষ্য করা গেছে, গত বুধবার থেকে বাঘড়া ও ভাগ্যকুল এলাকার পানিবন্দী পরিবারগুলোতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা করা হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনের বন্যার পানি দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার বাঘড়া ইউনিয়নটি এখন প্রায় কোমর পানির নিচে। ইউনিয়নের ১নং ও ৪নং ওয়ার্ডে তালুকদার বাড়ি নামক খালের ওপর ২০/২৫ বাঁধ দিয়ে চলাচলের রাস্তা নির্মাণ করায় খালের পানি এখন লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠে। মধ্য বাঘড়া, তালুকদার বাড়ি, কাদির কান্দা, মাঘঢাল, কাঁঠালবাড়ি, বইচার পাড়া, উত্তর কামারগাঁও, নয়াবাড়িসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও এখানকার কাঁচা/পাকা রাস্তাগুলোতে বন্যার হাঁটু/কোমর পানি দেখতে পাওয়া গেছে। যদিও বন্যা মোকাবেলায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের নির্দেশে গত শনিবার তালুকদার বাড়ির খালের বেশ কয়েকটি বাঁধ কেটে দেওয়া হয়েছে। পদ্মায় পানির বৃদ্ধি থাকায় এখনও বাঘড়ায় বন্যার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। বাঘড়ায় পানি বৃদ্ধি হওয়ায় বাড়িতে বাড়িতে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন নারী পুরুষসহ শিশুরাও। বন্যায় বাঘড়াবাসীর দুর্ভোগ চরমে। এ সময় ওই এলাকার মাছ চাষী স্বপন বলেন, তার বেশ কয়েকটি পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন তিনি। অপরদিকে ভাগ্যকুল বাজার ও এর আশপাশের বেশ কিছু স্থানে বন্যার পানি দেখতে পাওয়া গেছে। বিশেষ করে পদ্মা নদীর তীরবর্তী ব্যস্ততম ভাগ্যকুল ও কামারগাঁও বাজারের এখন হাঁটু পানি। এছাড়াও বাজার এলাকার বেশ কিছু বসতবাড়ি ও কয়েকটি পাকা রাস্তায় বন্যার পানি দেখা গেছে। ওই এলাকার কয়েক হাজার বসবাসকারী মানুষের এখন স্বাভাবিক চলাফেরায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অন্যদিকে রাঢ়ীখাল এলাকার কবুতর খোলাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় এখানকার বসবাসকারী মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় পানিবন্দীরা জানান, করোনা ও বন্যার সার্বিক পরিস্থিতিতে তারা এখন দিশেহারা। বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা একেবারেই কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ভাগ্যকুলের স্থানীয় ইউপি সদস্য পারভেজ কবির বলেন, ভাগ্যকুল বাজারটি এই অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বাজার। এখানে রয়েছে বিভিন্ন নামিদামী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অনেক মানুষের বসবাস। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে ও বন্যার পানি মোকাবেলায় এখানে একটি বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকায় বন্যার পানি মোকাবেলায় একটি বাঁধ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।