নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ একই পরিবারের ৩ জন করোনা রোগী বিনা চিকিৎসা আর অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মাত্র ৩০০ গজ দূরে অবস্থিত গোল্ডেন সিটির মোহাম্মদ আলী উকিলের বাড়ির ২য় তলায় রয়েছে এই রোগীরা। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ড্রাগ ইন্টারন্যাশনালের এম. আর নুরুদ্দীন ৪/৫ বছর যাবৎ ঐ বাড়িটিতে সপরিবারে বসবাস করছে। সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৬ এপ্রিল ঐ দম্পতির নমুনা পরীক্ষা করা হয়। গত ১৭ এপ্রিল পজিটিভ রিপোর্ট হাতে পেয়ে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে করোনার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। পর্যায়ক্রমে আক্রান্ত হয় তাদের ৯ বছরের কন্যা সন্তান সানজিদা।
বেশ কিছুদিন হোমকোয়ারেন্টাইনে থাকাকালীন নিজেরা রান্না করে খেতে পারতো। বর্তমানে চিকিৎসার অভাবে অসুখের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় তারা এখন শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছে। রান্নার অভাবে অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। বাড়ীর মালিক মোহাম্মদ আলী বলেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে তারাও মরবে আর আমাদেরকেও মেরে যাবে। এছাড়াও স্থানীয় বসবাসকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নুরুদ্দীন ঘরের বারান্দায় বসে থাকে এবং থুতু ফেলে। বাড়ীটি রাস্তার পাশে হওয়ায় থুতু এসে রাস্তায় পড়ছে। এতে করে পথচারীসহ মসজিদে যাওয়া মুসল্লিদের জন্য স্বাস্থ্য ঝুুঁকিতে রয়েছে পুরো এলাকা। এসময় গোল্ডেন সিটির সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, এলাকায় লকডাউন অবস্থায় রয়েছি। এলাকার বিভিন্ন লোক ফোন করে জানাচ্ছে যে, নুরুদ্দীন রাস্তায় থুতু ফেলে ময়লা ফেলে, তার লোক এসে খাবার দিয়ে যায়। এতে করে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কেন প্রশাসন এখানে রাখছে তা বলতে পারছি না। আজ ছোট মেয়েটার রেজাল্ট পজিটিভ আসছে এখন ব্যবস্থা না নিলে বিপদ হয়ে যাবে। এলাকায় লকডাউন অবস্থায় একজন গ্রাম পুলিশ এক ঘন্টার জন্য দেখা গেলেও আর কাউকে লকডাউনরত লাইনে দেখা যায় নাই। আমরা এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আগামীকাল হাসপাতালে যাবো এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সৈয়দ রেজাউল ইসলাম স্যারকে বিষয়টি জানাবো এবং আক্রান্ত পরিবারটিকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করবো। তা না হলে আক্রান্ত পরিবারের পাশাপাশি আমরাও ফ্যামিলিসহ এলাকাবাসী স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছি বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সৈয়দ রেজাউল ইসলামের কছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আক্রান্ত রোগীকে বাড়ীতে রাখার নির্দেশ রয়েছে আইইডিসিআর এর। তাই কোথাও পাঠানো হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রহিমা আক্তার জানান, আক্রান্ত ব্যক্তিদের অবস্থার অবনতি হলে অবশ্যই ইউ. এইচ. ও সাহেবের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শ্রীনগরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শিশুসহ একই পরিবারের ৩ করোনা রোগীর বিনা চিকিৎসা আর অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন; এলাকাবাসী করোনা ঝুঁকিতে
আগের পোস্ট