নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ জেলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল হচ্ছে ট্রমা সেন্টার। এটি নির্মিত হয়েছে জেলার শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর এলাকায়। এক যুগের বেশি সময় লাগিয়ে এটি নির্মিত হলেও বর্তমানে এটি মানবসেবার জন্য এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি বলে খবর পাওয়া গেছে। এখানে যে বিদ্যুৎ লাইন দেয়া হয়েছে তাতে কেচিগেটের সামনের বাতিটি দিনরাত সারাক্ষণই জ্বলতে থাকে। তাছাড়া এ গেইটের উপর দিয়ে উচ্ছে গাছও বেয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। তাতে মনে হচ্ছে এখানে এটি দেখা বা পরিচর্যার কোন ব্যক্তি বা লোক এখানে নেই। এখানে প্রধান ফটকে যে তালা ঝুলছে তাতে মনে হয় এটি সহসা কখনো খোলা হয় না। প্রশাসনিক উদ্যোগের অভাবে সরকারের বিপুল অর্থে ব্যয়ে নির্মিত এই ট্রমা সেন্টারটি বর্তমানে মানুষের কোন কাজেই লাগছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এটি প্রাথমিকভাবে নির্মাণের সময়ে একাধিকবার ঠিকাদার পরিবর্তন হওয়ায় এটি নির্মাণ কাজে সময় সবচেয়ে বেশি লেগেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। প্রথম দফায় নির্মাণের সময় এটি ঠিকাদারের হাত বদলে এটির যাত্রা শুরু হয়। যার কারণে এটি আলোর মুখে বাঁধার সম্মুখীন হয় বলে শোনা যাচ্ছে।
জানা যায়, ঢাকা মাওয়া-খুলনা মহাসড়কের সড়ক দূর্ঘটনা কবলিত মানুষকে দ্রুত সেবা দিতে ষোলঘরে একটি ট্রমা সেন্টার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৭ সালে দরপত্র আহ্বান করে মুন্সীগঞ্জের গণপূর্ত অধিদপ্তর। এরপর এর নির্মাণ কাজ পেরিয়ে গেছে এক যুগের বেশি সময়। কিন্তু এর নির্মাণ কাজ শেষ করা হলেও রোগীদের সেবা দেবার উপযুক্ত হয়নি শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর এলাকার এ ট্রমা সেন্টার।
দফায় দফায় দরপত্র আহ্বান, নির্ধারিত স্থান পরির্বতন, অর্থাভাব ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় লাগলো এই এলাকার একটি মাত্র ট্রমা সেন্টারের নির্মাণ কাজ শেষ করতে। শুরুতে ২০০৭ সালে জেলার লৌহজং উপজেলার মাওয়ায় ট্রমা সেন্টার নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারণ করে জেলা গণপূর্ত অধিদপ্তর। পরে সেখানে সুবিধামত জায়গা না পাওয়ায় পরে শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর এলাকায় এই ট্রমা সেন্টারটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে খবর পাওয়া গেছে। প্রথম ভাগে তৃতীয় দফায় দরপত্র আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে মেসার্স আব্দুস সাত্তার নামে প্রতিষ্ঠানটি ট্রমা সেন্টারের তিন তলা নির্মাণের কাজ পায়। দরপত্র আহ্বানের তিন বছর পর ২০১০ সালের ২৬ অক্টোবর মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রীনগর উপজেলা ষোলঘর এলাকায় এর নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
তিন তলা ভবন নির্মাণের পর সেখানে আরো কিছু বাড়তি কাজ যোগ করে দেয় গণপূর্ত অধিদপ্তর। কিন্তু বাড়তি কাজ করতে অস্বীকৃতি জানায় মের্সাস আব্দুস সাত্তার। ফলে ট্রমা সেন্টার নির্মাণের অযোগ্য বলে বিবেচিত হয় এই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। এরপর ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে গণপূর্ত বিভাগ।
এ ট্রমা সেন্টারের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় দুই কোটি ৩২ লাখ টাকা। তবে এই তিন তলা ভবন তৈরী করতেই দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা উত্তোলন করে নেয় মেসার্স আব্দুস সাত্তার। এরপর ২০১৫ এপ্রিল মাসে মুন্সীগঞ্জ গণপূর্ত অধিদপ্তর অবশিষ্ট কাজের জন্য আবার দরপত্র আহ্বান করে। টেক ঢাকা জোন নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রথমে নির্বাচিত হলেও অক্টোবর মাসে জানা যায়, তারা দরপত্র অংশীকারি হিসাবে অযোগ্য। ফলে সেই মাসেই আবারো দরপত্র আহ্বান করে গণপূর্ত অধিদপ্তর।
শ্রীনগরে ট্রমা সেন্টার আজও চালু হচ্ছে না
আগের পোস্ট