নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে নৌভ্রমণে গিয়ে মদ পান করে ১৪ বছরের এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিয়াম নামের ওই কিশোর ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার দক্ষিন বাড়ৈখলী গ্রামের অটোচালক সোহেল শেখের ১৪ বছরের ছেলে সিয়াম ঈদের দিন সকালে শাকিল নামের এক মাদক ব্যবসায়ীর নেতৃত্বে স্থানীয় আরো ২০/২৫ জন কিশোরের সাথে ট্রলারযোগে দোহার উপজেলার মৈনট ঘাটে পিকনিকে যায়। ট্রলারে সে অন্যান্যদের সাথে সারাদিনে ১০ থেকে ১২ বার মদ পান করে। পরে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে পিকনিক পার্টির অন্যান্যরা তাকে মাথায় পানি দিয়ে ও লেবুর টক পান করিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করে। রাত ৮টার দিকে তার সঙ্গীরা তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। বাড়িতে ফিরে সে অনবরত বমি করতে থাকে। শেষ রাতের দিকে তাকে পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার একটি বেসরকারী ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে সিয়ামের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়। সিয়ামের মৃত্যুর পর তথ্য গোপন করে ময়নাতদন্ত না করেই তার পরিবার লাশ নিয়ে আসে। পরে খবর পেয়ে শ্রীনগর থানার এএসআই ইসলাম ওই রাতে সিয়ামের বাড়িতে উপস্থিত হয়। কিন্তু তার পরিবারের আপত্তির মুখে বাড়ৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম তালুকদারের উপস্থিতিতে লাশ রেখে আসে। ঐ দিন রাত সাড়ে ৩টার দিকে সিয়ামকে দাফন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। ঘটনার পর থেকে পিকনিক পার্টির বাকী সদস্যরা পলাতক রয়েছে। বাড়ৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম তালুকদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সিয়ামের বাবা খরচের ভয়ে কোন মামলা মোকদ্দমা করতে রাজি হয়নি। তিনি আরো বলেন, যারা এতো কম বয়সী ছেলের হাতে মদ তুলে দিয়েছে তাদের খুঁজে বের করা দরকার। শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হেদায়াতুল ইসলাম ভূঞা সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পরিবারের কেউ অভিযোগ করতে রাজি না হওয়ায় লাশ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়নি।