নিজস্ব প্রতিবেদক : মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে এখন ভরা বর্ষা মৌসুম। এই অঞ্চলের খাল-বিল, পুকুর, নদী-নালাসহ জলাশয়গুলোতে পানিতে থৈ থৈ অবস্থা। আর বর্ষার পানি বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে দেশি মাছসহ নানা প্রজাতির ছোট-বড় মাছের উপস্থিতি। এসব মাছ শিকারের জন্য স্থানীয়ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের টেঁটা, জাল ও ফাঁদের। তবে গ্রাম-গঞ্জে মাছ শিকারের জন্য টেঁটার ব্যবহার হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। এই মৌসুমে বিভিন্ন চকে ছোট ডিঙ্গি নৌকায় ভেসে টেঁটা দিয়ে মাছ শিকারিদের উপস্থিতি বাড়ে। শিকারিরা টেঁটা দিয়ে নলা, গর্মা, রুই, কাতল, কালিবাউশ, শোল, টাকিসহ অন্যান্য মাছ শিকার করে। এ সিজনে স্থানীয় হাটবাজারে টেঁটার বিকিকিনি বাড়ে।
শ্রীনগর সদর এলাকার দেউলভোগ সড়কের পাশে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে টেঁটার শিল্প। বিভিন্ন আকার ও আকৃতির টেঁটা তৈরির কাজে কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শ্রীনগর উপজেলা রোডের দেউলভোগে বেশ কয়েকটি দোকানে তৈরি হচ্ছে নানা ধরণের টেঁটা। এর পাশাপাশি টেঁটার কুড়া, বড়শির ছিপসহ মাছ ধরার অন্যান্য উপকরণ বিকিকিনি হচ্ছে এখানে। সড়কের পাশে সারিবদ্ধভাবে বাঁশের টেঁটার কুড়া, বড়শির ছিপ ও নানা ধরণের রেডিমেট টেঁটার পসরা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। রেডিমেট টেঁটা তৈরির কাজে পারদর্শী প্রায় অর্ধশতাধিক শ্রমিক কাজ করছে এখানে।
জানা গেছে, এখানে ৮/১০টি দোকানে টেঁটা তৈরি হচ্ছে। প্রকারভেদে রেডিমেট এসব টেঁটা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে। বড়শির ছিপ ও টেঁটার কুড়া বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়। এছাড়াও শিকারিদের চাহিদা অনুযায়ী টেঁটার অর্ডার নেওয়া হচ্ছে এখানে।
রিয়াদ হোসেন, প্রান্ত, রুবেলসহ কয়েকজন শ্রমিক বলেন, বর্ষা মৌসুমে টেঁটার কারখানায় দিন মজুরিতে কাজ করছেন তারা।
রাজু মিয়া নামে একজন দোকানি বলেন, বর্ষা মৌসুমে ৩-৪ মাস টেঁটা তৈরির কাজে ব্যস্ততা বাড়ে। এছাড়া বছরের বাকি মাস এ পেশায় কাজ থাকে না। রেডিমেট টেঁটাসহ মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ পাইকারি বিক্রির পাশাপাশি খুচরা বিক্রি করছেন তিনি। এখানে সাপ্তাহিক মঙ্গলবার দেউলভোগ হাটের দিন টেঁটার ক্রেতাদের ভিড় বাড়ে।