নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের মন্দিরের নামকরণ নিয়ে দীর্ঘদিনের জের ধরে ১ জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার হাঁসাড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের হাসাড়া নাগের পাড়া পোস্টঅফিসের পূর্বপাশে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা আহত শান্তি মন্ডল (৩৮)কে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এ ব্যাপারে হাঁসাড়া নাগেরপাড়া শ্রী শ্রী সার্বজনীন মা রক্ষা কালী ও দুর্গা মন্দির কমিটির সভাপতি মাধব মন্ডল বাদী হয়ে রাজীব মন্ডল রাজুসহ ৬ জনকে বিবাদী করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিগত ১৯২৫ সালে হাঁসাড়া নাগেরপাড়ার লোকজন একটি কালী মন্দির স্থাপন করে পূজা করে আসছিলেন। গত ২০১৫ সালে হাঁসাড়া নাগেরপাড়ার জয়নগরপাড়া, সেনেরপাড়া, সেনেরবাড়ী ও হালদারপাড়ার প্রায় ১৬১ ঘর মিলে কালী মন্দিরটি নতুন নামকরণ করে শ্রী শ্রী সার্বজনীন মা রক্ষা কালী ও দুর্গা মন্দির। এতে ৪/৫ ঘরের লোক কৃঞ্চ মন্ডলের ছেলে রাজীব মন্ডল রাজু (৩২), মন্টু মন্ডলের ছেলে শুভ (২৮), সাধু মন্ডলের ছেলে প্রসেনজিৎ (২৭), মৃত ফুলচাঁন মন্ডলের ছেলে শংকর মন্ডল (৫০), শংকরের ছেলে কলি মন্ডল (২৬)গং বাঁধা দিয়ে অন্য নামে নামকরণ করতে চাইলে উভয়ের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে স্থানীয় সাবেক এমপি সুকুমার রঞ্জন ঘোষ উভয়কে নিয়ে বসে মন্দিরের নাম শ্রী শ্রী সার্বজনীন মা রক্ষা কালী ও দুর্গা মন্দির বহাল রেখে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। ঐসময় বিষয়টি রাজু গং মেনে নিয়ে আসলে পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে মন্দির কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্যদের নানাভাবে গালিগালাজ করে আসছিল। গত সোমবার শুভ মন্ডল মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে কমিটির সভাপতির নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার সময় শান্তি মন্ডল এসে প্রতিবাদ করায় তাকে দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে শান্তি বাড়ী ফেরার পথে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে রাজু গংসহ আরো অজ্ঞাতনামা লোকজন নিয়ে শান্তির উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাকে এলোপাথারি লাঠি, লোহার রড দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। শান্তির ডাকচিৎকারে পাশের দপ্তরীর স্ত্রী ও নরেশ মন্ডল এগিয়ে আসলে তাকে খুন করার হুমকি দিয়ে চলে যায়। হাঁসাড়া নাগেরপাড়া শ্রী শ্রী সার্বজনীন মা রক্ষা কালী ও দুর্গা মন্দির কমিটির সভাপতি মাধব মন্ডল বলেন, আমরা কয়েকপাড়ার ১৬১ ঘর লোকজন মিলে এই মন্দিরে দীর্ঘদিন যাবৎ পূজা করে আসছি। মাত্র ৪/৫ ঘরের লোকজন মন্দিরের নামকরণ নিয়ে আমাদের সবাইকে হয়রানি করে আসছে এবং এই ঘটনার জের ধরে আমার ভাতিজা শান্তিকে তারা ভাড়াটিয়া লোকজন এনে মারধর করে আহত করেছে। এ ব্যাপারে হাঁসাড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম বলেন, আমি প্রথম ঘটনা শোনার পর মাধব মন্ডলের বাড়িতে গিয়ে উভয়কে নিয়ে বসার জন্য বলেছিলাম। পরে যে সন্ধ্যার দিকে মাধব কাকার ভাতিজাকে মারধর করেছে শুনছি এবং উভয়ে নাকি আইনে গেছে। এ ব্যাপারে আমাদের বললে আমরা চেয়ারম্যানকে নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দিব। শ্রীনগর থানা পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এস/আই) আল-আমিন বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে মারধরের ঘটনার সত্যতা পেয়েছি।