নিজস্ব প্রতিবেদক
শ্রীনগরে একটি মসজিদে ফ্যান বন্ধ নিয়ে সাবেক ইউপি সদস্যের বাড়ি-ঘরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে সাবেক ইউপি সদস্যের স্ত্রী ও ছেলে গুরুতর আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রবিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার বাঘড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বাঘড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত সাবেক ইউপি সদস্য আলহাজ¦ আঃ কাদেরের ছেলে আতাউর রহমান মধু জানায়, গত রবিবার রাতে নামাজ আদায়ের জন্য তার আপন বোন জামাতা নজরুল ইসলাম (৪০) বাড়ির পাশে পশ্চিম বাঘড়া নতুন গেইট বাইতুল নূর জামে মসজিদে নামাজ পড়তে যায়। নামাজ শেষে নজরুলসহ কয়েকজন মুসল্লি মসজিদের ভিতরে তালিমে বসেন। অন্যদিকে একই এলাকার মুনছুর মাদবরের ছেলে আমিন (৪০) মসজিদের বারান্দায় নামাজ আদায় করছিলেন। নামাজ শেষে আমিন মাদবর মসজিদের বারান্দা থেকে মসজিদের ভিতরে আসেন এবং বোন জামাতা নজরুলের মাথার উপরের ফ্যানটি বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে মসজিদের ভিতরেই নজরুল ও আমিন মাদবরের মধ্যে বাকবিতন্ডা বাঁধে। একপর্যায়ে মসজিদের ইমাম তাদের উভয়ের মাঝে ঝগড়া মীমাংসা করে দেয়। সবাই মসজিদ থেকে যার যার বাড়ির ফিরছিলেন। এমন সময় পথিমধ্যে একই এলাকার পাশর্^বর্তী মৃত-মধু মোল্লার ছেলে জুয়েল মোল্লা (৪২), আমার বোন জামাতাকে বলেন, তুই আমিন মাদবরের সাথে খারাপ ব্যবহার করছ। তাই, এই মসজিদে আর নামাজ পড়তে আসতে পারবিনা। এ নিয়ে জুয়েল ও নজরুলের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। আশপাশের লোকজনসহ আমরা ছুটে আসি। হঠাৎ জুয়েল মোল্লা ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সালামকে ফোন করে। মুহুর্তের মধ্যে ইউপি সদস্য সালাম (৫৫)এর নেতৃত্বে তার ভাই আলম (৫০), পাশর্^বর্তী হিরন মোল্লা, বাবুল মোল্লা, হৃদয়, বিজয়, মিজানুরসহ প্রায় ৪০/৪৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ বাহিনী লাঠি, লোহার রড, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমিসহ আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যের উপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালায়। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা দৌড়ে পালিয়ে বাড়িতে গেলেও ইউপি সদস্য সালাম ও তার পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় আমি কোনরকমে পালিয়ে প্রাণে বাঁচি ও আমার বাড়ির অন্যান্য সদস্যগণ দৌড়ে বাড়িতে গিয়ে ঘরের ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। আমার বৃদ্ধা মা কমলা বেগম (৭০) দরজার সামনে বসে থাকায় সন্ত্রাসীরা আমার বাড়িতে প্রবেশ করে বৃদ্ধা মা কমলাকে মারধর করে। পাশর্^বর্তী বাড়ির আঃ সামাদ মাদবর বলেন, রাত প্রায় ১০টার দিকে হৈচৈ শুনে আঃ খালেকসহ আমরা কয়েকজন কাদির মেম্বারের বাড়িতে যাই। সাবার হাতেই লাঠি, রামদাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ছিল। আমি সালাম মেম্বারের গলা ধরে অনুরোধ করেছি বাড়িতে চলে যেতে। এরপরও তাদের বাড়ি থেকে সরাতে পারিনাই। পরে বাঘড়া ফাঁড়ির পুলিশ এসে বাঁশি বাজিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে আহত অবস্থায় মা ও ছেলেকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। হামলার ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, কোন হামলার ঘটনা ঘটেনি। তবে ঝগড়া বিবাদ হয়েছিল। হামলার ব্যাপারে আহত আতাউর মধু বাদি হয়ে শ্রীনগর থানায় একটি অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে বাঘড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই ইলিয়াসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং উভয়পক্ষকে সরিয়ে দেই। এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ হয়েছে।
শ্রীনগরে মসজিদে ফ্যান বন্ধকে কেন্দ্র করে সাবেক ইউপি সদস্যের বাড়ি-ঘরে হামলায় স্ত্রী-ছেলে আহত
আগের পোস্ট