নিজস্ব প্রতিবেদক
আর মাত্র ২ দিন পরেই পবিত্র রমজান শুরু। আর রমজান এলেই শ্রীনগরের ব্যবসায়ীদের পোয়াবারো। প্রতি বছরই রমজান এলে ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করতে। প্রশাসনের বাজার মনিটরিংও ভেস্তে যায় ব্যবসায়ীদের নানা ধরনের কৌশলের কাছে। এরই মধ্যে উপজেলার বাজারগুলোতে চালসহ প্রায় সব ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামছাড়া দাম বেড়ে চলেছে। রমজানের আগে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সরকারের নানা উদ্যোগ থাকলেও উপজেলার বাজারগুলোতে এখনও কোন তদারকি লক্ষ্য করা যায়নি। এতে অসহায় হয়ে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা। রমজান শুরুর আগেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে চাল, ডাল, মাছ-মাংস, সবজিসহ সকল প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম। রমজানকে সামনে রেখে বাজার করতে আসা ব্যক্তিরা সবকিছু সহ্য করে অতিরিক্ত মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছু ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। সরেজমিনে উপজেলা সদর বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা যায়, ২৫ কেজি চালের বস্তায় ৫০ টাকা ও ৫০ কেজি চালের বস্তার দাম ১০০ টাকা বেড়েছে। আর পেয়াঁজ, রসুন, আদা, হলুদ, কাঁচামরিচ, বেগুন, শসার দাম হয়েছে দ্বিগুণ। মুদি দোকানে কেজি প্রতি চিনি, ডাল, ছোলা, গুড় প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৫/৬ টাকা। খুচরা ৯৫ টাকার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি ৫৫০ টাকার গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। ১২০ টাকার ব্রয়লার এখন ১৪০ টাকা। ২০০ টাকা পিস কক মুরগী এখন ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে আশঙ্কাজনক হারে। সাধারণ মানুষ মাছ ক্রয় করতে সাহস পাচ্ছে না। কিছু দোকানে মূল্য তালিকা সাঁটানো থাকলেও তালিকার চেয়ে বেশী মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্য সামগ্রী। তবে বাজার মনিটরিং করার জন্য বাজার কর্মকর্তাদের তেমন কোন সদিচ্ছা নেই বলেও অনেকের অভিযোগ রয়েছে। লকডাউনের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও জরুরি পণ্যবাহী যান চলাচলে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। এরপরেও সরবরাহে ঘাটতির কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানায়। রমজান শুরুর আগে বিভিন্ন ধরনের নিত্যপণ্য সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির বিষয়ে অটোচালক বজলু শেখ (৫০) এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারাদিন রিকশা চালিয়ে সাড়ে ৪ শত টাকা পেয়েছি। পণ্যসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় তা দিয়েই প্রয়োজনের তুলনায় সংসারের অর্ধেক বাজার করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। তবে রমজানের বাজার করতে আসা একাধিক ব্যক্তি তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, প্রতিবছর রমজান এলেই উপজেলার বিভিন্ন বাজারগুলোতে অতিরিক্ত মূল্যে নিত্যপণ্য সামগ্রী ক্রয় করতে হয়। অনেক সময় প্রশাসনের বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা থাকলেও ব্যবসায়ীদের নানা কৌশলের কাছে মনিটরিং ব্যবস্থাও ভেস্তে যায়। বাজার মনিটরিং বিষয়ে শ্রীনগর সদর বাজারের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা বাজারে মনিটরিং ব্যবস্থা রেখেছি। তারপরও আপনাদের সহযোগীতা প্রয়োজন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণব কুমার ঘোষের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আজই যোগদান করেছি। জেলা পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা রয়েছে। তারপরও আমরা বাজারগুলোর পণ্যসামগ্রীর দাম নিয়ন্ত্রণ রাখতে আগামীকাল থেকে মনিটরিং ব্যবস্থা চালু রাখবো।
শ্রীনগরে রমজানকে সামনে রেখে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি
আগের পোস্ট