নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে লকডাউনে থাকাকে কেন্দ্র করে হামলা, ঘর-বাড়িসহ আসবাবপত্র ভাংচুর, নগদ অর্থ ও স¦র্ণ লুটের ঘটনা ঘটেছে। গত ২৩ মে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উপজেলার তন্তর এলাকার পুরারবাগ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ওই গ্রামের সিদ্দিক ঢালীসহ তার ভাইদের ঘর-বাড়িতে হামলা চালায় একই গ্রামের মৃত আলতাফ বেপারীর ছেলে নুরুজ্জামান বেপারী (৪৫) ও তার সহযোগীরা। এতে করে সিদ্দিক ঢালীর ভাই সুমন ঢালী ও তার মা আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং বাড়িতে ৩/৪ ঘর, ঘরে থাকা কাঠের খাটিয়া, ষ্টীলের আলমারী, শোকেস, টিভি, চেয়ার, বেসিনসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ভাংচুর করে, আলমারীতে থাকা নগদ ও স¦র্ণ লুট করে নেয় হামলাকারীরা।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুমন ঢালী গত ১২ মে ঢাকা থেকে গ্রামের নিজ বাড়িতে আসে। গ্রামেই পুরারবাগ মসজিদে নামাজ আদায় করতে গেলে মসজিদের সভাপতি নুরুজ্জামান বেপারী ও তার সহযোগীরা সুমন ঢালীকে মসজিদে নামাজ আদায় করতে নিষেধ করে। বর্তমান করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সুমন ঢালী ১৪ দিন বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত নেয় এবং বাড়িতেই থাকেন। গত ২০ মে নুরুজ্জামান বেপারীর চাচা জাহাঙ্গীর আলমও ঢাকা থেকে বাড়িতে আসে কিন্তু সে বাড়িতে না থেকে অবাধে ঘোরাঘুরি এবং মসজিদেও নামাজ আদায় করে। গত ২৩ মে শুক্রবার সিদ্দিক বেপারী জুম্মার নামাজ আদায় করতে গিয়ে দেখেন নুরুজ্জামান বেপারীর চাচা জাহাঙ্গীর আলম জুম্মার নামাজ আদায় করতে মসজিদে উপস্থিত আছেন। তখন নুরুজ্জামান বেপারীকে জিজ্ঞেস করে, আমার ভাই ঢাকা থেকে আসছে বলে বাহিরে ঘোরাঘুরি ও মসজিদে নামাজ আদায় নিষেধ। কিন্তু তোমার চাচার জন্য নিষেধ নয় কেন? বলতেই নুরুজ্জামান বেপারী ক্ষিপ্ত হয়ে বাক তর্কে জড়িয়ে পড়েন। ঐদিনই বিকালে আসর নামাজের পরে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় নুরুজ্জামান বেপারী রাগান্বিত হয়ে তার পালিত সন্ত্রাসীবাহিনী নিয়ে সিদ্দিক ঢালীর বাড়িতে হামলা চালান এবং এ ভাংচুরের ঘটনা ঘটান।
তন্তুর ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি মহিলা সদস্য শিল্পী আক্তার বলেন, হামলার কিছুক্ষণ পরেই শ্রীনগর থানা পুলিশ এসআই আউয়ালসহ তার সঙ্গীয় সোর্স নিয়ে উপস্থিত হন এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশের উপস্থিতিতে নুরুজ্জামান গ্রুপ পুনরায় হামলা চালানোর চেষ্টায় মসজিদের সামনে লোকজন জড়ো হতে থাকলে পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেন। এস.আই. আউয়াল বলেন, আজকের (শুক্রবার) হামলার ঘটনাটি অতি দুঃখজনক । কেননা একেতো করোনা ভাইরাসের কঠিন সময় যাচ্ছে, অপর দিকে রমজানের শেষ সময়।
ঐদিন রাত্রেই সিদ্দিক বেপারী বাদী হয়ে নুরুজ্জামান বেপারীসহ তার সহযোগী হামলাকারী ১৩ জনকে আসামী করে শ্রীনগর থানায় একটি অভিযোগ করে। পরের দিন ২৪ মে বেলা সাড়ে ১১টায় ঐ অভিযোগের তদন্তে পুনরায় শ্রীনগর থানায় এস.আই. আঃ কাদির ঘটনাস্থল সরেজমিনে তদন্ত করেন এবং সেই রাতেই এজাহারভুক্ত মামলা রুজু করে। যাহার মামলা নং১২/১০১, তাং ২৪.০৫.২০২০ইং। নুরুজ্জামান বেপারী বিকল্পধারার নেতা হওয়ার সুবাদে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য সিদ্দিক ঢালী ও তার ভাইদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।
নুরুজ্জামান বেপারীর সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন স¦ীকার করে বলেন, আমি কিছু বুঝার আগেই আমার ছেলেরা এ ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে। আমি মসজিদের সভাপতি ওনি মামলা করে ভুল করেছে। আমি সমাজের লোকজন নিয়ে মীমাংসা করে দিতাম।