অভিযোগ না আসায় সার ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা হয়নি
নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জে ইউরিয়া সার পাচারকালে এলাকাবাসী একটি সার বোঝাই পিকআপ ভ্যান আটক করে থানায় সোপর্দ করার ঘটনায় রহস্যজনক কারণে এখনো মামলা দায়ের হয়নি। এর আগে উপজেলা কৃষি অফিসার শান্তনা রানী নিজে থানায় গিয়ে একতা এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার সার ব্যবসায়ী আরমান শেখের পক্ষে সুপারিশ করে সারসহ পিকআপ ভ্যানটি ছাড়িয়ে আনেন। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হলে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদের শিরোনাম হয়। অবৈধভাবে এসব ইউরিয়া সার রাখার অপরাধে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো সহযোগিতা করায় জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন কৃষি কর্মকর্তাকে। অথচ এই সার কেলেংকারির ঘটনায় গতকাল বুধবার পর্যন্ত শ্রীনগর থানায় এ বিষয়ে কোন মামলা দায়ের হয়নি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শান্তনা রানীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি প্রতিবেদন দিয়ে দিয়েছি। এর বেশী কিছু বলতে চাইনা। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার জানান, আমি এখনো কোন প্রতিবেদন পাইনি। কৃষি কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে মামলা দায়ের করে প্রতিবেদন দিতে। আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। শ্রীনগর থানার ওসি হেদায়েত উল ইসলাম ভূইয়া গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসার শান্তনা রানী নিজে থানায় গিয়ে একতা এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার সার ব্যবসায়ী আরমান শেখের পক্ষে সুপারিশ করে সারসহ পিকআপ ভ্যানটি ছাড়িয়ে আনেন। ইউরিয়া সারের ব্যবসার লাইসেন্স না থাকায় এই সার ব্যবসায়ীকে আটক করে স্থানীয় জনতারা। তবে তার লাইসেন্সটি হাতে পাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তাছাড়া একতা এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার সার ব্যবসায়ী আরমান শেখের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ ছাড়া একজন ব্যবসায়ীকে আটক করা কি ঠিক হবে। উল্লেখ্য, গত ১০ ফেব্রয়ারি বুধবার সকালে ভাগ্যকুল-দোহার সড়কের এম রহমান শপিং কমপ্লেক্সের পশ্চিম পাশে বটতলায় একতা এন্টারপ্রাইজ থেকে একটি পিকআপ ভ্যান বোঝাই করে অবৈধভাবে এসব ইউরিয়া সার ঢাকার কেরানীগঞ্জের নৌ-ঘাট এলাকার দিকে পাঠাচ্ছিল সার ব্যবসায়ী আরমান শেখ। লাইসেন্সবিহীন এসব সার তিনি কিভাবে পেলেন? এ নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয় উপজেলা জুড়ে। এছাড়াও একতা এন্টারপ্রাইজের গুদাম থেকে এর আগে নকল ধানবীজ, অনুমোদনহীন জৈবসার বিক্রির দায়ে মোবাইল কোর্ট জরিমানা করে। সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় প্রতিষ্ঠানটি থেকে ১৬৩ বস্তা নকল সার জব্দ করে তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিগার সুলতানা প্রতিষ্ঠানটির গুদাম সিলগালা করে দেন। সিলগালার পরদিনই কৃষি কর্মকর্তা শান্তনা রানী একতা এন্টারপ্রাইজের সিলগালা খুলে সার বিক্রির অনুমতি প্রদান করেন। গত ১০ ফেব্রুয়ারি ইউরিয়া সার কেলেংকারির ঘটনায় আরমান শেখের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে অবৈধ সার ব্যবসায়ীর পক্ষে কৃষি কর্মকর্তার সাফাই করার ঘটনায় স্থানীয় কৃষক ও সচেতন মহল বিস্মিত হয়ে পড়ে।