নিজস্ব প্রতিবেদক, ১৭ জুলাই ২০১৯ :মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার খাসমহল বালুরচর গ্রামে শিক্ষা বোর্ডের অনুমতি ছাড়া মেধা বিকাশ একাডেমী নামে বিদ্যালয় বানিয়ে মেধা বিকাশ পরিচালিত হচ্ছে। শিক্ষা বোর্ডের অনুমতিবিহীন এই মাধ্যমিক একাডেমি পরিচালনা নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে ওই একাডেমির এক’শ গজ দূরত্বে অবস্থিত খাসমহল বালুরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, ম্যানেজিং কমিটির লোকজনসহ স্থানীয়দের মাঝে। ৬ষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান চলছে এই একাডেমিটিতে। শিক্ষা কর্মকর্তা বা শিক্ষা অধিদপ্তরের কোন রকম অনুমতি না নিয়ে এবং সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছে তার নিজ গতিতে। খাসমহল বালুরচর উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোন রকম অনাপত্তি, ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) এবং সরকারি নিয়মনীতি উপক্ষো করে ভর্তি নেয়া হয় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মেধা বিকাশ একাডেমী নামের অবৈধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিএনপির প্রভাবশালী নেতা হাজী আবুল হোসেন ও তারই ছোট ভাই মোয়াজ্জেম। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নির্মিত ভবনটি যে স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে সেটিও সরকারী খাসজমির উপর নির্মিত বলে অনেকেই অভিযোগ তোলেন। এর আগেও ওই অবৈধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর প্রশাসনিক লোকজন প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করার পর কোন বৈধতা খুঁজে পাননি। পরবর্তীতে প্রশাসনিক লোকজনদের অবৈধ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করতেও দেখা যায়নি বলে স্থানীয় লোকজনদের সাথে কথপোকথনে উঠে আসে।
এ বিষয়ে মেধা বিকাশ একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মোঃ ফারুকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি একটু ব্যস্ত আছি। প্রয়োজনে আপনার সাথে সাক্ষাতে কথা বলবো। মোবাইল ফোনে তিনি কোন ধরনের বক্তব্য দিতে অনিহা প্রকাশ করে ফোন কেটে দেন। পরে তিনি প্রতিবেদকের কাছে লোক পাঠিয়ে দেখা করার কথা বলে বার্তা পাঠান।
খাসমহল বালুরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন, আমার স্কুলের অনেকটাই ক্ষতি হচ্ছে ওই প্রতিষ্ঠানটির কারণে। তাদের কারণে আমার স্কুলের প্রায় সিংহভাগ ছাত্রছাত্রী কমে গেছে।
খাসমহল বালুরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোস্তফা কামাল বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানটির কারণে এম.পি.ও ভূক্ত স্কুলের অনেকটাই ক্ষতি হচ্ছে। এ বিষয় নিয়ে বালুরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ, ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয় লোকজন মিলিত ভাবে একাধিকবার প্রশাসনের কাছে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। প্রশাসনিক লোকজন পরিদর্শনও করে গেছেন। কিন্ত ওই একাডেমীটি বন্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেন নি। গত সপ্তাহে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে এবিষয়ে কথা বললে তিনি আমাকে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করার জন্য। আমি লিখিত অভিযোগ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।
সিরাজদিখান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, বোর্ডের কোন অনুমতি আছে কি নাই আমার জানা নেই। তবে আমাদের এখান থেকে কোন অনুমতি দেওয়া হয় নাই। যদি এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কোন লিখিত অভিযোগ পাই তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।