নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে একটি পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। পাশের বাড়ির সাথে একটি জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে বাড়িতে কোন পায়খানা তৈরি করতে পারছে না। অন্যের বাড়ি গিয়ে প্রকৃতির ডাক সারতে হয় তাদের। দীর্ঘদিন যাবৎ অত্যাচারের শিকার হয়ে আছে তারা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বয়রাগাদী ইউনিয়নের উত্তর বাহের ঘাটা গ্রামে। ভুক্তভোগী এসহাক মৃধা (৭১) পরিবার পরিজন নিয়ে নানা অত্যাচারের মধ্যে রয়েছেন। তার পাশের বাড়ি তার ভাগিনা নাছির মৃধার (৫৩) সাথে একটি জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। আদালতে মামলাও আছে। স্থানীয়রা জানান, তারা রাজনৈতিক শিকার। একপক্ষ বর্তমান চেয়ারম্যানের অপর পক্ষ সাবেক চেয়ারম্যানের লোক। নাছিররা বর্তমান চেয়ারম্যান ও মহিলা ইউপি সদস্য শেফালীর কারণে বেশি ক্ষমতা দেখায়। যে কারণে টয়লেট তুলতে দিচ্ছে না।
এসহাক মৃধা জানান, আমি স্থানীয় চেয়ারম্যান, সাবেক চেয়ারম্যান ও থানায় বিষয়টি জানিয়েছি। কেউ কোন সুরাহা করতে পারেনি। আমরা এখন কার কাছে যাবো, এভাবে মানুষ বাঁচতে পারে না। ৩ বছর যাবৎ কষ্টে আছি পায়খানা তুলতে পারছিনা। তার ছেলে রিয়াদ মৃধা জানান, ১৪ শতাংশ বাড়িটির মধ্যে আমার মা ৭ শতাংশের মালিক বাকিটা এজমালি। ভাগ না হওয়ায় ওয়ারিশ হিসেবে ভুপাতো ভাই নাছির মৃধাও এখানে থাকে। আগে তাদের বাড়ির টয়লেট ব্যবহার করেছি তখন সম্পর্ক ভালো ছিলো। এখন করতে দেয় না। আমরা টয়লেট তুলতে চাইলে বাঁধা দেয়, তাকে স্থানীয় ইউপি সদস্য শেফালী বেগম সহযোগিতা করে। তার কারণে নাছির মৃধা এত সাহস দেখায়। আমার মা আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ৩ বছর ধরে মামলা চলছে। নাছির মৃধার সাথে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে মহিলা ইউপি সদস্য শেফালী বেগম জানান, এসহাক মিয়া আমার আত্মীয়, কিন্তু সে ১১টা বিয়ে করেছে। তার এক স্ত্রী মারা গেছে। ছোট স্ত্রী এখন তার সাথে আছে। বাকি অন্যরা তার সাথে থাকে না এবং তাকে দেখতেও পারে না। তার বাড়িতে কোন জমি নাই। যতটুকু ছিল সে বিক্রি করেছে। এখন তার বোনদের ওয়ারিশের জায়গা। তাই তার ভাগিনা নাছিরের সাথে দ্বন্দ্ব। ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন গাজীকে ফোনে পাওয়া যায়নাই। সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান সোহাগ জানান, একবার নাছিররা বলেছিল বাড়ির পাশে একটা জমিন আছে সেটা তাদের চাষ করতে দিলে বাথরুম তুলতে বাধা দিবে না। সে জমিন নিয়ে ধইনচা গাছ লাগিয়েছে। এরপর এসহাক মিয়া বাথরুম তোলার জন্য জিনিস পত্র কিনে আনলে আবার বাধা দেয়। ওসি সাহেবসহ আমরা কয়েকবার মিট করতে সহযোগিতা করেছি। কিন্তু নাছিররা আসে না কথা শোনে না। সিরাজদিখান থানা অফিসার ইনচার্জ মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা বারবার ব্যবস্থা নিয়েছি। স্থানীয় প্রতিনিধিদের সমাধান করতে বলা হয়েছে, তারাও কোন সমাধানে আসতে পারেনাই। একটি পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। সে বিষয়টি তাদের বুঝিয়েছি কিন্তু তারা কাউকেই মানে না। আদালতে মামলা আছে।