নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার লতব্দী, বাসাইল, শেখরনগর ইউনিয়নের এলাকায় কৃষকদের ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ার প্রতিবাদে ও তা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় কৃষক ও জমির মালিকরা। ইউনিয়নের খিদিরপুর চন্ডিবর্দ্দি এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধন চলাকালে এলাকার অনেকে জানান, উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের ১০-১২ জন ভূমিদস্যুর নেতৃত্বে প্রতিদিন ৫০টির বেশি খনন যন্ত্র (ড্রেজার) দিয়ে প্রথমে ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে পরে ড্রেজার বসিয়ে ওইখান থেকে ১০০/১৫০ ফিট গর্ত করে বালু নেওয়া হচ্ছে। এভাবে এ পর্যন্ত প্রায় চার হাজার বিঘা জমির মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে। এতে বাধা দেওয়ায় নিরীহ কৃষকদের মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। বিভিন্ন সময় বালু ব্যবসায়ীদের হামলার শিকারও হয়েছেন গ্রামবাসী। খিদিরপুর গ্রামের ফ্রান্সপ্রবাসী মিজানুর রহমান সরকার মিজান অভিযোগ করেন, আমি ফ্রান্সে বসবাস করি। বছরে একবার দেশে আসি। আমার দুই একর তিন ফসলী জমি থেকে মাটি কেটে নিয়েছেন। তাতে আমার জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমি থানায় অভিযোগ করেছি, আমার জমির মধ্যে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এবার জমিতে কোনো ফসল চাষ করতে পারিনি। মাটি কাটতে অনেক নিষেধ করা হলেও ভূমিদস্যুরা কোন কথা শোনেননি। বাধা দিতে গেলে বাহিনী দিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় কৃষক মোঃ আমির হোসেন বলেন, প্রকাশ্যে দিনের বেলায় এলাকার ভূমিদস্যুরা আমার প্রায় চারশ বিঘা ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়েছে। যেটুকু জমি আছে, তা-ও ভাঙনের ঝুঁকির মুখে। পুলিশ রাতে থাকে কিন্তু মাটি কাটায় তারা কোন বাধা দেয় না। লতব্দী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজ ফজলুল হক বলেন, আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। দলের নাম ভাঙিয়ে যারা প্রবাসী ও কৃষকদের ফসলি জমির মাটি কেটে নিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম (ইউএনও) বলেন, এর আগেও কৃষকদের ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার সময় কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে খনন যন্ত্র জব্দ ও শ্রমিকদের আটক করে কারাদন্ড ও জরিমানা করা হয়েছে। সিরাজদিখান থানার ওসি মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন জানান, বালু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।