নিজস্ব প্রতিবেদক : মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে পরকীয়ার জেরে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীকে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে হত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গত শুক্রবার দুপুরে নিহতের মা আমেলা বেগম বাদী হয়ে সিরাজদিখান থানায় তার ছেলের বৌয়ের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দায়ের করেন। গৃহশিক্ষকের সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের জন্য স্ত্রী এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। এর আগে গত ৬ এপ্রিল রাতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই ব্যক্তি খুলনা পেট্টো মেক্স কোম্পানীর কর্মচারী ছিলেন। তার নাম মোঃ মতিন চোকদার (৩৪)। তিনি সিরাজদিখান উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের রড় শিকারপুর গ্রামের মৃত নূরুল ইসলাম চোকদারের ছেলে।
নিহতের পারিবারের অভিযোগ, মৃত মতিন চোকদারের স্ত্রী শাহিদা আক্তারের সাথে সিরাজদিখান বড়ইহাজী আশরাফুল উলুম ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ মাজহারুল ইসলামের পরকীয়া সম্পর্কসহ নানা বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। গত ৬ এপ্রিল খুলনা থেকে বাড়ি আসলে রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়লে রাত সাড়ে ১১টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন মতিন। এর দেড় ঘন্টা পরে মৃতের স্ত্রী শাহিদা তার স্বামী মোঃ মতিন কোন সাড়া শব্দ করছেন না বিধায় তার পরিবারের সকলকে বিষয়টি জানায়। ওই রাতেই তাকে নিমতলা জনসেবা হাসপাতালে অচেতন অবস্থায় নিয়ে গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মতিন চোকদারকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের পরিবার আরো জানান, পুত্রবধূ শাহিদা আক্তার ভাত আর ফিরনির সাথে বিষ জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে খেতে দেয় নিহত মতিনকে। এতে সামান্য সন্দেহ হলেও পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেনি তারা। খাওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পর থেকেই পেটে, বুকে নানা যন্ত্রণায় ভুগতে থাকেন মতিন চোকদার। এরপর ঘুমিয়ে পড়েন।
নিহতের বড় ভাই মোঃ শাহ আলম চোকদার, মোঃ বোরহান চোকদার, মোঃ নাদিম চোকদার ও প্রতিবেশীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে খুলনায় ছিলেন মতিন। গত এপিল মাসে এলাকায় ফিরে আসলে স্ত্রী শাহিদা আক্তারের (২৬) সঙ্গে শিক্ষকের পরকীয়ার কারণে বিরোধ দেখা দেয়। একপর্যায়ে স্ত্রী তার বাবার বাড়িতে চলে যান। নিহতের মৃত্যুর দুইদিন আগে তাকে বাড়িতে আবারও ফিরিয়ে আনা হয়।
নিহত মতিন চোকদারের ভাইদের অভিযোগ, ঘটনার দিন দিবাগত রাতে স্ত্রী শাহিদা আক্তার খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাওয়ান। এর কিছুক্ষণ পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি অসুস্থ হয়ে বাড়িতেই মারা যান। পরে পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে নিমতলা জনসেবা হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সিরাজদিখান থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) শাহেদ আলম মামুন বলেন, মৃত্যুর প্রায় ১৫ দিন পর এসে এখন হত্যার অভিযোগ করছে নিহতের পরিবার। শুক্রবার দুপুরে নিহত ব্যক্তির স্বজনরা হত্যার অভিযোগ করেছেন। বাদী হয়েছেন নিহতের মা আমেলা বেগম। কিন্তু লাশ দাফন করা হয়ে গেছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।