নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে পুকুরে গরু ঘরের ঢালা দিয়ে গরুর গোবর ও ময়লা ফেলে পানি দূষিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের মালপদিয়া গ্রামের মো. রানার পুকুরে এই ময়লা ও গোবর ফেলছে বলে অভিযোগ করেন আব্দুর সালামের ছেলে মো. রানা। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আব্দুর সালাম বেপারীর ছেলে মো. বিল্লাল বেপারী, মো. মনির বেপারী, আনোয়ার বেপারিরা তাদের বসতবাড়ীর পুকুরের পাশে দীর্ঘদিন ধরে একটি গরুর খামার করে গরু পালন করছে। সম্প্রতি তারা তাদের গরুর খামারের ঢালা পুকুরে দেওয়ায় ও পুকুরের পানিতে গরুর গোবর, বর্জ্যপদার্থ, মল-মূত্র মিশে পুকুরের পানি দূষিত হয়ে যাচ্ছে। এই পুকুরটির পানি এই এলাকার ৩টি পরিবার নিয়মিত ব্যবহার করত। পানি দূষিত হওয়ায় তারা এখন চরম বিপাকে পড়েছে। এই পুকুরের পানি ব্যবহার করে বাড়ীর শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা বিভিন্ন চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় পুকুরের পানি ব্যবহার করা সকলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। মো. মাহিন বলেন, আমি এই পুকুরে গোসল করার পর থেকে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকানি হয়েছে। এই চুলকানি থেকে আমার শরীরে এখন বড় বড় ঘা হয়ে যাচ্ছে। অনেক ডাক্তার দেখিয়ে কিছুটা সুস্থ হলেও আমার শরীরে ও পায়ে বড় বড় ঘা রয়ে গেছে। স্থানীয় হুমায়ুনের স্ত্রী জোসনা বেগম বলেন, এই পুকুরের পানি দিয়ে আমরা আমাদের পরিবারের সকল কাজ করতাম। কিন্তু বিল্লাল বেপারির গরুর গোবরের ঢালার কারণে পানি সম্পূর্ণ পঁচে গেছে। এখন আর এই পানি ব্যবহার করার কোন ব্যবস্থা নাই। আমাদের এলাকার কলের পানি দিয়ে ভাত তরকারি রান্না করলে তা কালো হয়ে যায়। তাই আমরা সবাই পুকুরের পানি ব্যবহার করতাম। কিন্তু এখন আর ব্যবহার করতে পারছি না। আব্দুল ছালাম এর স্ত্রী রোজিনা খাতুন বলেন, আমাদের এই পুকুরের পানি আয়নার মত পরিষ্কার ছিল। কিন্তু সালাম বেপারির ছেলেরা পুকুরে ময়লা ফেলে পুকুরের পানি নষ্ট করে ফেলছে। আমার ছেলে ও নাতিদের এই পুকুরে গোসল করার কারণে তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পানি গোটা ও চুলকানি হয়েছে। আমরা চাই এই পুকুরটা যেন আগের মত পরিষ্কার করা হয়। আর এলাকার সবাই যেন এই পুকুরের পানি ব্যবহার করতে পারে। অভিযোগের বিষয়ে মনির ব্যাপারির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা গরুর কোন ঢালা পুকুরে দেইনাই। তবে পুকুরের কাছেই আমাদের গরু ঘর। যদি আমাদের দ্বারা কারো কোন ক্ষতি হয় আমরা তা সমাধান করে দিব। ইউপি সদস্য মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, আমি বিষয়টি জেনে সালাম বেপারি ও রানা উভয়ের বাড়ীতে গিয়েছিলাম। তবে তারা আমার কাছে জায়গার সমস্যা নিয়ে বলেছিল। কিন্তু পুকুরে ময়লার ব্যাপারে কিছু বলেনাই। তবে আমি দেখেছি পুকুরের পানি পঁচে গেছে আর তারা উভয়পক্ষই খুব ক্ষিপ্ত।
সিরাজদিখান উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর মো. শাহআলম বলেন, এই বিষয়টি এখনো আমাকে কেউ জানায়নি, জানালে ব্যবস্থা নিব।