বৃষ্টি ও বন্যার দূষিত পানিতে আখ গাছে ফাঙ্গাস দেখা দিয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
চলতি মৌসুমে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা জুড়ে আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে আখের ছত্রাক ও কান্ডপচা দেখা দিয়েছে। এতে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন উপজেলার আখচাষীরা। টানা বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে আখ ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এতে গাছের গোড়া থেকে মাটি সরে আখ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে এমন অবস্থায় চাষ করা আখ নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় রয়েছে কৃষককূল। তবে কয়েকদিন পানি কমতে শুরু করলেও গতকাল থেকে আবার পানি বেড়েছে। জানা যায়, আখ গাছগুলো পানি বাড়ার কারণে ডুবে যাওয়া এবং গাছগুলোর গোড়া থেকে মাটি সরে গিয়ে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে ময়লা ও দূষিত পানির কারণে ছত্রাক, কান্ড ও গোড়া পচার মত রোগ হচ্ছে। এর ফলে গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। গাছগুলো মধ্যে মরে যাচ্ছে। বিগত কয়েক বছর ধরে এই অঞ্চলে আখ চাষ করে আসছেন কৃষকরা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে আখের ভালো ফলন দেখছিলেন কৃষকরা। তবে শেষ সময়ে এসে অতিবৃষ্টি ও বন্যার পানি বৃদ্ধিতে আখের জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর এ কারণে সারা বছরের কষ্ট বৃথায় চলে যাচ্ছে। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আবিরপাড়া, দক্ষিণ তাজপুর, রশুনিয়া, ইছাপুরা, হিরনের খিলগাঁও, মধ্যপাড়া, রাজানগর, শেখরনগর, মালখানগর বয়রাগাদী, কোলার গ্রামগুলোতে আখ চাষ বেশি করেছে। প্রথম দিকে গোড়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি থাকায় আখ পুষ্ট ও মিষ্টি হচ্ছিলো। তবে সেখানে অতি বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে চাষীদের ক্ষতির আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় কাজলা পাশত, সাতাশ ও অমিতাভ এ তিন ধরনের আখ চাষ করা হয়। তবে সাতাশ আখটি খুব মিষ্টিও হয়। আর অমিতাভ জাতের আখের রস মেশিনে জুস বানিয়ে বিক্রি হয়। আগে পোকার কারণে লোকসান হলেও, সম্প্রতি বছরগুলোতে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে আখ চাষ করে সাফল্য পাচ্ছেন এখানকার কৃষকরা। গত বছর ২৪৫ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হলেও এ বছর ৪৫০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ করেছে। কোলা গ্রামের আখচাষী মজিবর বলেন, এ বছর আমি ৬ পাখি (বিঘা) আখ চাষ করেছি। পানি বাড়ার সাথে সাথে আখের গোড়ার মাটি সরে গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। এ বছর আমার ৬ পাখি আখ চাষ করতে ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ৩ পাখি জমির আখ সব নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি জমির আখ বিক্রি করে বদলির খরচ উঠবে। সিরাজদিখান বাজার আখ বিক্রেতা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি পিস আখ ৯ টাকা দরে কিনে এনেছি জমি থেকে, বিক্রি করছি ১০ টাকা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় বলেন, উপজেলায় দিন দিন আখ আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর আখ চাষ বেড়েছে। অতি বৃষ্টি ও বন্যার দূষিত পানিতে আখ গাছগুলোর মধ্যে ফাঙ্গাস জন্ম নিয়েছে এবং পানির কারণে গাছগুলোর গোড়া থেকে মাটি সরে গেছে। অপরদিকে ছত্রাক, কান্ড পচার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে।