নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্বামী দ্বীন ইসলাম ভূইয়ার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে সিরাজদিখান থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী নারী। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৪/০৫/২০১৭ইং সালে উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের শুলপুর গ্রামের মৃত আবুল ভূইয়ার ছেলে দ্বীন ইসলাম ভূইয়ার (৪০) সাথে একই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ভারালিয়া গ্রামের মোঃ ইমান আলীর মেয়ে মোসাঃ মিতু আক্তার মৃত্তিকা (২৭)র ইসলাম শরীয়ত মোতাবেক ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেনমোহরে বিবাহ হয়। বিবাহের সময় যৌতুক হিসেবে এক ভরি স্বর্ণের চেইন ও ৫টি ফার্নিচার তাদের কথা মতো দেওয়া হলেও বিয়ের কিছুদিন পর থেকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য বিভিন্নভাবে অত্যাচার শুরু করেন স্বামী ও তার পরিবার। স্বামীর ব্যবসার জন্য বাবার বাড়ি থেকে ৫ লক্ষ টাকা না নিয়ে গেলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করেন স্বামী ও তার পরিবার। এ বিষয়ে মিতু আক্তার মৃত্তিকা বলেন, আজ থেকে ৬ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে উভয়পক্ষের সম্মতিতে দ্বীন ইসলাম ভূইয়ার সাথে আমার বিবাহ হয়। বিবাহের সময় তাদের চাহিদা মোতাবেক ১ ভরি স্বর্ণের চেইন ও ৫টি ফার্নিচার দেওয়া হলেও তার কিছুদিন পর থেকে বিভিন্ন অজুহাতে আমার বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য আমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন। এমতাবস্থায় আমি অন্তঃসত্ত্বা হই। এ খবর শুনে আমার স্বামী দ্বীন ইসলাম ভূইয়া আমার বাবার বাড়ি থেকে যদি তাকে টাকা এনে না দেই তাহলে আমাকে ও আমার গর্ভে থাকা সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করেন। গত ০১/১১/২০২১ ইং আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে আমার স্বামী আমাকে বলেন, আমার বাবার বাড়ি থেকে তাকে ৫ লক্ষ টাকা এনে দিতে হবে তার ব্যবসার জন্য। আমি অস্বীকৃতি প্রকাশ করলে আমার স্বামী দ্বীন ইসলাম ভূইয়া (৪০), আমার শাশুড়ি নাজমা বেগম (৫৮) স্বামী- মৃত আবুল ভূইয়া, আমার ননদ আইরিন বেগম (২৫) স্বামী- মৃত রফিকুল ইসলাম, আমেনা বেগম (৩০) স্বামী- মনির হোসেন, স্বর্ণা আফরিন (২২) স্বামী- পাভেল সরকার এসে আমাকে মারধর শুরু করেন আর বলেন, তাদের ভাইয়ের ভাত খেতে হলে টাকা দিতে হবে তা না হলে আমাকে মেরে গুম করে ফেলবে। আমার চিৎকার চেঁচামেচি শুনে বাড়ির পাশের লোকজন আমাকে উদ্ধার করেন। আমি ও আমার সন্তানের প্রাণ বাঁচাতে আমি আমার সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসি। আমার বাবার বাড়ি থেকে ফোনে আমার স্বামীর সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে আমার স্বামী ও শাশুড়ি টাকা দিয়ে ব্যবসা না দিয়ে দিলে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে বারণ করলে আমি তাদের চাকরির কথা বললে চাকরি করায় ইচ্ছা প্রকাশ করলে আমি আল-মুসলিম গ্রুপে চাকরির ব্যবস্থা করে দেই। ১০ দিন ডিউটি করে সেখান থেকে চলে আসে। পুনরায় আবার টাকা দিয়ে ব্যবসা দিয়ে দিতে বলেন। এ বিষয়ে সিরাজদিখান থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দ্বীন ইসলাম ভূইয়া বলেন, আমি আমার বউকে কখনো যৌতুকের টাকার জন্য কিছু বলিনাই। আমার মা, বোনের সাথে ঝগড়া হয়েছে। কিন্তু তাকে তারা মারধর করেছেন কিনা তা আমার জানা নেই।
শেখরনগর তদন্তকেন্দ্রের আইসি মোঃ নাছির শেখ জানান, তাদের এই বিষয়টি নিয়ে একবার বসা হয়েছিলো। ছেলেটির মামা তার নিজ দায়িত্বে মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তাব করলে ছেলের মানসিক সমস্যার কারণে মেয়ে ছেলের বাড়িতে যাওয়ার অস্বীকৃতি প্রকাশ করে। মেয়েকে বোঝার জন্য ১ সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। এ বিষয়টি নিয়ে সামনের শুক্রবার বসার তারিখ রয়েছে।