নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার জৈনসার ইউনিয়নের কাঁঠালতলী গ্রামের কবরস্থান রাস্তার নির্মাণ কাজ করা হয়েছে গ্রামবাসীর টাকায়। রাস্তাটি নির্মাণে কাঁঠালতলী গ্রামবাসীর কাছ থেকে উত্তোলন করা হয়েছে ৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা। পরে চলতি বছরের শুরুতে ৫০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে এ রাস্তার কাজ শুরু করে। ৩ মাসের মধ্যে রাস্তার নির্মাণ কাজ শেষ করে। মাটি ফেলে কাঁঠালতলী কবরস্থানে রাস্তার নির্মাণ কাজ করেন জৈনসার ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মোয়াজ্জেম ঢালী।
এদিকে, এ রাস্তা নির্মাণে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে ২০১৯-২০ অর্থ-বছরে ৫ লাখ ৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আবার রাস্তা নির্মাণ শেষে তা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসকে বুঝিয়েও দেওয়া হয়েছে। তাহলে এ রাস্তা নির্মাণ হয়েছে কাদের টাকায়- এমন প্রশ্ন উঠেছে এখন। কাঁঠালতলী গ্রামের কবরস্থান রাস্তাটি গ্রামবাসীর নাকি সরকারি বরাদ্দকৃত টাকায় নির্মিত হয়েছে-তা নিয়ে নানা কানাঘুষা চলছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাস্তা নির্মাণে সরকারি বরাদ্দকৃত টাকা ফেরত চলে গেছে বলে জানিয়ে গ্রামবাসীর কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ইউপি মেম্বার মোয়াজ্জেম ঢালী গ্রামবাসীকে সরকারি বরাদ্দের টাকা চলে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। এতে গ্রামবাসীর রাস্তা নির্মাণে টাকা দিয়েছে। গ্রামের বাসিন্দা আলী হোসেন লাবু, শেখ মোহাম্মদ নাজিম, এমদাদুল হক পলাশ বলেন, আমাদের কাছ থেকে টাকা উঠিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা সবাই মিলে রাস্তার জন্য টাকা দিয়েছি। বর্ষা মৌসুমে কবরস্থানে লাশ দাফনে যাতে কোনো সমস্যা দেখা না দেয়, সেইজন্য রাস্তা নির্মাণের জন্য অনেকের জমির মাটি দেওয়া হয়েছে। অনেকের বাড়ি কেটে মাটি দিয়েছে। ইউপি মেম্বার আমাদের টাকায় রাস্তা নির্মাণ করেছে। তারা আরো বলেন, আমরা লোকমুখে শুনেছি রাস্তা নির্মাণে সরকারি বরাদ্দ এসেছে। যদি সরকারি টাকা এসে থাকে তবে আমাদের টাকা নেওয়ার কারণ কি-তা খতিয়ে দেখে রাস্তা নির্মাণ কাজের এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি দাবী করেছেন গ্রামবাসী।
এ প্রসঙ্গে উপজেলার জৈনসার ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য মোয়াজ্জেম ঢালী বলেন, স্থানীয় তিন চারজনের কাছে টাকা পয়সা দিয়েছে গ্রামবাসী। কিন্তু আমার কাছে কেউ টাকা দেয়নাই। টাকা পয়সা দিয়েছে তারা কমিটির মাধ্যমে। সমাজবাসী মাটি কাটা ও ড্রেজারিংয়ের মাধ্যমে খাল ভরাটের যে খরচ হয়েছে আমার মাধ্যমে হয়নাই। সেটা হয়েছে ভূইয়া সাহেবের মাধ্যমে। সেটার হিসাব পত্র আছে। তা তৌহিদ কাকা বলতে পারবে। আমি সরকারি টাকায় কাজ করেছি। সরকারি বরাদ্দের টাকায় আমার কাজ হয়েছে। টাকা প্রসঙ্গে জানতে শমসের আলী ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করার লক্ষ্যে তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হয়। তবে তিনি কলটি কেটে দিয়েছেন।
জৈনসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম দুদু বলেন, এই জায়গায় এক আলোচনা সভায় আমি বলেছিলাম রাস্তা বেঁধে দিব। জনগণকে আশ্বস্ত করেছিলাম। সেইজন্য আমি এই জায়গায় বরাদ্দ দিয়েছি। সরকারি টাকায় রাস্তা হয়েছে। রাস্তা দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। স্থানীয় লোকজন খুশি। ইউপি সদস্য এলাকাবাসীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছে আমি শুনেছি। যদি ইউপি সদস্য স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে টাকা উঠিয়ে থাকে তাহলে আমরা বসে এটার একটা সমাধান করে দেব। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আইমিন সুলতানা বলেন, আমরা বরাদ্দকৃত টাকায় রাস্তা বুঝে পেয়েছি। এলাকাবাসীর কাছ থেকে টাকা যদি উঠায় তবে আমাদের কাছে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।